
লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই ফের বিতর্কে দেশের অন্যতম বিমানসংস্থা। এবার অভিযোগ উঠল দিল্লি থেকে হংকংগামী এআই-৩১৪ বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমান ঘিরে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটে ১ জুন। বিমানটি দিল্লি থেকে উড়ানের এক ঘণ্টা পরই এক যাত্রী দেখতে পান, আপৎকালীন নির্গমনের দরজা কাঁপছে এবং সেখান থেকে বাতাসের শব্দ স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখে বিমানের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যাত্রীদের মধ্যে। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, এমন গুরুতর বিষয় জানানো সত্ত্বেও বিমানসেবিকা বা কর্মীরা প্রথমে কোনও গুরুত্বই দেননি। বরং পরে এক কর্মী এসে দরজার ফাঁকে কেবল একটি ন্যাপকিন গুঁজে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।
শেষ পর্যন্ত বিমানটি নিরাপদে হংকং বিমানবন্দরে অবতরণ করে। কিন্তু মাটি ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। বিমানবন্দরে নামার পর অনেকেই প্রশ্ন তোলেন—বিমানের এমন ত্রুটির পরও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?
এই ঘটনার জেরে চাপের মুখে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়া একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। সংস্থা জানায়, “এই ঘটনায় কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বিমানটি সব ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা পাশ করে তবেই উড়েছিল। দরজার প্যানেল থেকে কিছু শব্দ শোনা গেলেও, তাতে যাত্রীদের নিরাপত্তার কোনও সমস্যা হয়নি।” এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে আরও জানানো হয়েছে, “হংকং বিমানবন্দরে অবতরণের পর ইঞ্জিনিয়ারিং টিম বিমানটি পরীক্ষা করেছে এবং পরে ওই বিমানে দিল্লিগামী ফ্লাইট এআই-৩১৫-এ কোনওরকম শব্দ পাওয়া যায়নি। আমাদের কাছে যাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
তবে এত আশ্বাস সত্ত্বেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—একের পর এক ঘটনা কি এয়ার ইন্ডিয়ার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা তুলে ধরছে?
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই আহমেদাবাদের মেঘানিনগরে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২৪১ জন যাত্রী। সেই ঘটনার ধাক্কা এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই ফের একের পর এক বিভ্রাটের খবর উঠে আসছে। শুধু এয়ার ইন্ডিয়া নয়, ইন্ডিগো-সহ একাধিক সংস্থার বিমানেও সম্প্রতি যান্ত্রিক ত্রুটির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার, কলকাতা বিমানবন্দরেও দুটি বিমান উড়তে পারেনি একই কারণে।
বিমানযাত্রীদের মনেই এখন একটাই প্রশ্ন—নিয়মিত উড়ান নিরাপদ তো?