
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে যারা নিয়মিত পোস্ট করেন, তাদের পোস্ট অন্যের কাছে কতটুকু পৌঁছাচ্ছে, তা নিয়ে অনেকেরই কৌতূহল থাকে। কিন্তু সম্প্রতি অনেক ব্যবহারকারী ও পেজ অভিযোগ করছেন যে তাদের পোস্টের রিচ কমে গেছে। এর একটি প্রধান কারণ হতে পারে ফেসবুকের ‘রিকমেন্ডেশন সাসপেন্ডেড’ পদ্ধতি। মূলত, এই পদ্ধতি ব্যবহারকারীর পোস্টকে অন্য ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করে, আর কোনো পেজ বা প্রোফাইল এই তালিকা থেকে বাদ পড়লে তাকেই রিকমেন্ডেশন সাসপেন্ডেড বলা হয়।
কিন্তু কেন হয় এমন? এর পেছনে একাধিক কারণ থাকলেও, মূল কারণ হলো ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড এবং পরিষেবার শর্তাবলি লঙ্ঘন করা। ব্যবহারকারীদের জন্য এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তাদের অনলাইন উপস্থিতি এবং কার্যক্রমকে সরাসরি প্রভাবিত করে।
ফেসবুকের রিকমেন্ডেশন সাসপেন্ড হওয়ার কিছু প্রধান কারণ:
১. কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘন: ফেসবুকের নিজস্ব কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে, যা ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’ নামে পরিচিত। ঘৃণা-বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, সহিংসতায় উসকানি, হয়রানি বা যেকোনো আপত্তিকর ও ক্ষতিকারক কনটেন্ট পোস্ট করলে আপনার রিকমেন্ডেশন স্থগিত হতে পারে।
২. ভুয়া তথ্য ছড়ানো: ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো ফেসবুকের কঠোর নীতির পরিপন্থী। কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন বা অন্যদের বিভ্রান্ত করার জন্য নিজের আসল পরিচয় গোপন রাখেন, তবে তার অ্যাকাউন্টের রিকমেন্ডেশন বাতিল হতে পারে।
৩. অ্যাকাউন্ট হ্যাক বা ম্যানিপুলেট করা: যদি কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ অন্যের হাতে চলে যায় এবং সেটি ব্যবহার করে স্প্যামিং বা অন্যান্য ক্ষতিকারক কার্যকলাপ চালানো হয়, তবে সেই অ্যাকাউন্টের রিকমেন্ডেশন স্থগিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৪. অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই না থাকা: মাঝে মাঝে ফেসবুক ব্যবহারকারীর পরিচয় যাচাই করার জন্য কিছু অতিরিক্ত তথ্য চাইতে পারে। ব্যবহারকারী যদি এই যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হন, তাহলে তার অ্যাকাউন্টের রিকমেন্ডেশন বাতিল হতে পারে।
৫. অতিরিক্ত কার্যকলাপ: হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হারে পোস্ট করা, লাইক বা কমেন্ট করা অথবা অতিরিক্ত বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠালে ফেসবুক সেটিকে ‘স্প্যামিং’ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতেও রিকমেন্ডেশন সাসপেন্ড হতে পারে। এটি অটোমেটেড সিস্টেম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
৬. অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস সংক্রান্ত সন্দেহজনক কার্যকলাপ: একাধিক ডিভাইস থেকে একই সময়ে বারবার লগইন বা লগআউট করলে অথবা ঘন ঘন আইপি অ্যাড্রেস পরিবর্তন হলে ফেসবুক এটিকে সন্দেহজনক কার্যকলাপ হিসেবে বিবেচনা করে। এমন ক্ষেত্রেও আপনার রিকমেন্ডেশন স্থগিত হতে পারে।
৭. আইডি নকল করা: অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আইডি বা পেজ নকল করলে, বা ছদ্মবেশ ধারণ করে কোনো কার্যক্রম চালালে ফেসবুক তাৎক্ষণিকভাবে রিকমেন্ডেশন বন্ধ করে দিতে পারে।
করণীয় কী? যদি আপনার ফেসবুক পেজ বা প্রোফাইলের রিকমেন্ডেশন সাসপেন্ড হয়ে থাকে, তাহলে প্রথমেই আপনার অ্যাকাউন্টের নোটিফিকেশন চেক করুন। ফেসবুক সাধারণত নোটিফিকেশনের মাধ্যমে কারণ জানিয়ে দেয়। এরপর উল্লিখিত কারণগুলো পর্যালোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে ফেসবুকের হেল্প সেন্টারে যোগাযোগ করাও একটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। সঠিক কারণ চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিলে আপনার পেজ বা প্রোফাইল আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।