
সমাজের পিছিয়ে পড়া মহিলাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত এবং কল্যাণমূলক উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কাজ করে আসছে। বিনামূল্যে সেলাই মেশিন প্রদান থেকে শুরু করে গর্ভবতী মহিলাদের আর্থিক সহায়তা ও মাসিক ভাতা – এসবই সেই প্রচেষ্টার অংশ। তবে এবার এক ধাপ এগিয়ে তামিলনাড়ু সরকার অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের বিবাহের জন্য এক অনন্য প্রকল্প ঘোষণা করেছে, যা অভাবী পরিবারের মুখে হাসি ফোটাবে।
শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এটি একেবারেই গল্প নয়, ১০০ শতাংশ সত্যি! তামিলনাড়ু সরকারের ‘বিবাহ সহায়তা প্রকল্প’ খুব দ্রুত গতিতে কার্যকর হতে চলেছে। এই প্রকল্পের আওতায় দরিদ্র মেয়েদের বিবাহে আর্থিক সহায়তা হিসেবে সরকারের তরফ থেকে ২৫,০০০ টাকা এবং ৮ গ্রাম সোনা প্রদান করা হবে।
মাদার তেরেসা মেমোরিয়াল প্রকল্পের বিশেষ সুবিধা
এই প্রকল্পের একটি বিশেষ দিক হলো ‘মাদার তেরেসা মেমোরিয়াল অনাথ মেয়েদের বিবাহে আর্থিক সহায়তা প্রকল্প’। এই উপ-প্রকল্পের আওতায় অনাথ মেয়েরা ২৫,০০০ টাকা এবং ৮ গ্রাম সোনা (সাধারণ) পাবে। আরও এক ধাপ এগিয়ে, যারা স্নাতক বা ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন, সেই অনাথ মেয়েরা ৫০,০০০ টাকা এবং ৮ গ্রাম সোনা পাবেন। এটি শুধুমাত্র বিবাহে সহায়তা নয়, বরং নারীর ক্ষমতায়নের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আবেদনের পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
এই প্রকল্পে আবেদনের জন্য কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে:
বিয়ের আমন্ত্রণপত্র
আধার কার্ড
পারিবারিক কার্ড
আয়ের সার্টিফিকেট
বিধবা বা অনাথ প্রমাণপত্র (যদি প্রযোজ্য হয়)
কাস্টের সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
ব্যাঙ্কের বিবরণ
বিবাহ রেজিস্ট্রির সার্টিফিকেট (বিয়ের পর)
ছবি
আগ্রহী প্রার্থীরা ই-সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে অথবা স্থানীয় পৌর বা পঞ্চায়েত অফিসে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী মেয়েরা এই সুবিধা পাবেন। বিধবা পুনর্বিবাহের ক্ষেত্রে ২০-৪০ বছর বয়সসীমা প্রযোজ্য। তবে, নির্দিষ্ট প্রকল্পের ক্ষেত্রে আয়ের সীমা প্রযোজ্য হবে এবং প্রতি পরিবারে শুধুমাত্র একজন মহিলা এই সুবিধা পাবেন।
এই প্রকল্প ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গেছে এবং তামিলনাড়ু সরকারের এক প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি শুধুমাত্র অভাবী পরিবারগুলোকে বিবাহের খরচ মেটাতে সাহায্য করবে না, বরং সমাজের দুর্বল অংশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ধরনের প্রকল্প অন্যান্য রাজ্যগুলির জন্যও অনুপ্রেরণা হতে পারে।