দেশের তিন প্রধান টেলিকম সংস্থা Jio, Airtel ও Vi আবারও তাদের প্রিপেইড গ্রাহকদের জন্য প্ল্যানের বৈধতা (Validity) কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে আগের তুলনায় একই দামে গ্রাহকরা কম সময়ের জন্য পরিষেবা পাবেন, যা কার্যত ‘চুপিচুপি দাম বাড়ানোর কৌশল’ হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের কোটি কোটি প্রিপেইড ব্যবহারকারী এই সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়েছেন, কারণ যেখানে আগে ২৮ দিনের প্ল্যান পাওয়া যেত, সেখানে এখন অনেকটাই কম দিন পরিষেবা মিলছে।

কী পরিবর্তন এসেছে?

তিনটি সংস্থাই তাদের জনপ্রিয় কিছু প্রিপেইড রিচার্জ প্ল্যানে বৈধতা কমিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ১৯৯, ২৩৯, ২৯৯ টাকার প্ল্যানগুলিতে এই প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।

Jio: তাদের ২০৯ টাকার প্ল্যানে আগে ২৮ দিনের বৈধতা থাকলেও এখন তা কমে ২৪ দিন হয়েছে।
Airtel: ২৬৫ টাকার প্ল্যান এখন ২৮ দিনের বদলে ২৬ দিনের জন্য কার্যকর।
Vodafone Idea (Vi): ২৩৯ টাকার প্ল্যানের বৈধতাও কমিয়ে ২৪ দিন করা হয়েছে।
এই পরিবর্তনগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে দাম না বাড়িয়েও, কার্যত প্রতি দিনের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, আগের ২৮ দিনের প্ল্যানের বদলে এখন ২৪ দিনের জন্য পরিষেবা মিলছে, অথচ খরচ একই। এর ফলে বার্ষিক ভিত্তিতে গ্রাহকদের রিচার্জের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।

কেন এই সিদ্ধান্ত?

বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার প্ল্যানের দাম বাড়ানো টেলিকম সংস্থাগুলোর জন্য রাজনৈতিক ও প্রতিযোগিতামূলক ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তারা “Silent Price Hike” বা “নীরব মূল্যবৃদ্ধি” কৌশল নিচ্ছে। এই কৌশলে সরাসরি দাম না বাড়িয়ে প্ল্যানের বৈধতা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অথবা ডেটা বা কল বেনিফিট কিছুটা কমানো হচ্ছে। এভাবে সংস্থাগুলি ধাপে ধাপে লাভ বাড়াচ্ছে, অথচ সাধারণ গ্রাহক পরিবর্তনের পুরো প্রভাব সহজে বুঝতে পারছেন না।

গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া:

এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বহু গ্রাহক সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকেই অভিযোগ করছেন যে, এই সব পরিবর্তন “চুপিচুপি দাম বাড়ানোর কৌশল”। কিছু গ্রাহক ইতিমধ্যেই অন্যান্য সস্তা বিকল্পের সন্ধান করছেন, বিশেষ করে BSNL-এর মতো সরকারি সংস্থার দিকে ঝুঁকছেন।

গ্রাহকদের করণীয়:

এই পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের উচিত:

নিজের ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী সঠিক প্ল্যান বেছে নেওয়া।
দীর্ঘমেয়াদী প্ল্যান নেওয়া, যাতে প্রতি দিনের খরচ কমে।
বিভিন্ন সংস্থার অফার তুলনা করে সেরা ডিলটি বেছে নেওয়া।
উপসংহার:

একের পর এক পরিবর্তন এনে প্রিপেইড গ্রাহকদের উপর চাপ বাড়াচ্ছে টেলিকম সংস্থাগুলো। যদিও দাম সরাসরি বাড়েনি, কিন্তু বৈধতা কমিয়ে তারা কার্যত গ্রাহকদের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়াই একমাত্র উপায়।