ইরান ও ইজরায়েলের সংঘর্ষে তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য! তেহরানে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন কলেজের অধ্যাপক

ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে মধ্যপ্রাচ্য যখন উত্তপ্ত, ঠিক সেই সময়ে কলকাতার উইমেন্স ক্রিশ্চিয়ান কলেজের ভূগোলের অধ্যাপক ফাল্গুনী দে ইরানে গিয়ে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর তিনি তেহরানে আটকে পড়েছিলেন এবং বর্তমানে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ইরান-আজেরবাইজান সীমান্তের আস্তারাতে আটকে রয়েছেন।

অধ্যাপক ফাল্গুনী দে ইজরায়েলের সঙ্গে ইরানের সংঘাত শুরু হওয়ার আগেই তেহরান গিয়েছিলেন। সংঘাত শুরু হওয়ার পর তিনি প্রথমে হোটেলবন্দি হয়ে পড়েন। এরপর কোনোমতে একটি গাড়িতে করে ইরানের আস্তারা সীমান্তের দিকে রওনা দেন। তার উদ্দেশ্য ছিল সড়কপথে আস্তারা সীমান্ত পেরিয়ে আজেরবাইজানে পৌঁছানো এবং সেখান থেকে বাকু হয়ে ভারতে ফেরা। সেই অনুযায়ী তিনি আজেরবাইজানে প্রবেশের জন্য অনলাইনে ই-ভিসার আবেদনও করেছিলেন এবং সেটি পেয়েও ছিলেন।

ফোন করে অধ্যাপক ফাল্গুনী দে তার বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “গাড়িতে করে কোনোমতে দুঃস্বপ্নের তেহরান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। কিন্তু, ইরানের আস্তারা সীমান্তে আটকে পড়েছি।” তিনি জানান, ই-ভিসার মাধ্যমে শুধু বিমানে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া যায়। তবে সড়কপথে সীমান্ত পেরোনোর জন্য আজেরবাইজান সরকারের অভিবাসন দফতরের দেওয়া ‘মাইগ্রেশন কোড’ প্রয়োজন, যা তিনি জানতেন না।

অধ্যাপক দে বলেন, “সেটার আবেদনও করেছি। কিন্তু, তা কবে পাওয়া যাবে, জানি না। ওই মাইগ্রেশন কোড পেতে নাকি ১৫ দিন লাগবে।”

বর্তমানে আস্তারা সীমান্তে তার দিন কীভাবে কাটবে, তা নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এই অধ্যাপক। তিনি বলছেন, হাতে টাকাও প্রায় নেই। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে স্ত্রীর কাছ থেকে সামান্য টাকা লেনদেন করতে পারছেন, কিন্তু সেটাও সীমিত অর্থ। কবে, কীভাবে বাড়ি ফিরবেন, সেই দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তার। তবে স্বস্তির বিষয় একটাই – তিনি ‘দুঃস্বপ্নের’ তেহরান থেকে অনেকটাই দূরে চলে আসতে পেরেছেন। এখন শুধু বাড়ি ফেরার বিমান ধরার অপেক্ষায় রয়েছেন কলকাতার এই অধ্যাপক।

মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির পরিস্থিতিতে আটকে পড়া এই অধ্যাপকের দ্রুত এবং নিরাপদে দেশে ফেরা এখন সকলের কাম্য।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy