
যদি আপনার প্রায়শই ঝাল কিছু খেতে ইচ্ছে করে, অথবা খাবারের সাথে এক টুকরো আচারের স্বাদ নিতে ভালো লাগে, তাহলে জেনে নিন কীভাবে ঘরে বসেই তৈরি করবেন সুস্বাদু কাঁঠালের আচার! আম, লঙ্কা, গাজর এবং মুলার আচার আমাদের রান্নাঘরে পরিচিত হলেও, কাঁঠালের আচার খুব কম লোকেই তৈরি করেন। অথচ এর স্বাদ অতুলনীয়।
উপকরণ:
কাঁঠাল: ৫০০ গ্রাম (মাঝারি আকারের টুকরো করে কাটা)
সর্ষের তেল: ২৫০ মিলি
লবণ: স্বাদমতো
হলুদ গুঁড়ো: ১ চা চামচ
লাল মরিচের গুঁড়ো: ২ চা চামচ
সর্ষে বীজ: ২ টেবিল চামচ (মোটা করে গুঁড়ো করা)
মৌরি বীজ: ২ টেবিল চামচ
মেথি বীজ: ১ টেবিল চামচ
হিং: ১/২ চা চামচ
ভিনেগার: ২ টেবিল চামচ (ঐচ্ছিক, সংরক্ষণের জন্য)
কাঁঠালের আচার তৈরির পদ্ধতি:
১. কাঁঠাল প্রস্তুতকরণ: প্রথমে কাঁঠালের টুকরোগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর সামান্য লবণ এবং জল যোগ করে স্টিমারে প্রায় ১০ মিনিট রান্না করুন, যাতে টুকরোগুলো নরম হয়ে যায়। সেদ্ধ হয়ে গেলে টুকরোগুলো ছেঁকে নিন এবং সম্পূর্ণ ঠান্ডা করে শুকিয়ে নিন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যাতে আচারে কোনো আর্দ্রতা না থাকে, কারণ আর্দ্রতা আচার নষ্ট করে দিতে পারে।
২. মশলা তৈরি: একটি শুকনো প্যানে তেল ছাড়া মেথি, মৌরি এবং সর্ষে বীজ হালকা করে ভেজে নিন, যতক্ষণ না মশলা থেকে সুন্দর গন্ধ বেরোতে শুরু করে। ভাজা হয়ে গেলে ঠান্ডা করে মোটা করে পিষে নিন। এবার এই গুঁড়ো মশলার সাথে হলুদ, লাল লঙ্কা, লবণ এবং হিং মিশিয়ে নিন।
৩. মশলা মাখানো: সেদ্ধ ও শুকনো কাঁঠালের টুকরোগুলো একটি বড় পাত্রে রাখুন। এর উপর সমস্ত গুঁড়ো করা মশলা ভালো করে ছড়িয়ে দিন এবং হাত দিয়ে এমনভাবে মেশান যাতে কাঁঠালের প্রতিটি টুকরো মশলায় ভালোভাবে লেপে যায়।
৪. তেল যোগ করা: এবার সর্ষের তেল ভালো করে গরম করুন, যতক্ষণ না এর ঝাঁঝালো গন্ধ চলে যায়। তেল ঠান্ডা হতে দিন। হালকা গরম তেল কাঁঠাল এবং মশলার মিশ্রণের উপর ঢেলে দিন। সবকিছু ভালো করে মিশিয়ে নিন।
৫. ভিনেগার যোগ (ঐচ্ছিক): যদি আপনি ভিনেগার যোগ করতে চান, তাহলে এই পর্যায়ে এটি যোগ করতে পারেন। ভিনেগার আচারকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে এবং এর স্বাদকেও উন্নত করে।
৬. সংরক্ষণ ও পরিপক্বতা: একটি পরিষ্কার এবং শুকনো কাচের জারে আচারটি ভরে রাখুন। জারটিকে ৩-৪ দিন রোদে রাখুন যাতে আচারটি ভালোভাবে পেকে যায় এবং মশলাগুলো কাঁঠালের সাথে মিশে সুস্বাদু হয়।
এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে আপনার দেশি কাঁঠালের আচার! এবার এটি পরোটা, ভেজ পোলাও, খিচুড়ি বা যেকোনো খাবারের সাথে পরিবেশন করুন। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে এই আচারটি সহজেই ৬-৮ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।