নদীতে স্নান করতে নেমে বিপত্তি! কুমিরের গ্রাসে মহিলার মর্মান্তিক মৃত্যু, নিথর দেহ নদীর চড়ে

শান্ত নদী, রৌদ্রোজ্জ্বল দিন, আর শখের স্নান – এই সব কিছুই নিমেষে পরিণত হলো এক বিভীষিকাময় দুঃস্বপ্নে। ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া জেলার ভিতারকনিকা জাতীয় উদ্যানের কাছে এক খরস্রোতা নদীতে স্নান করতে নেমে কুমিরের কামড়ে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৫ বছর বয়সী এক মহিলা। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র আতঙ্ক।

অপ্রত্যাশিত আক্রমণ, নিথর দেহ নদীর চড়ে
জানা গেছে, এদিন ওই মহিলা নদীতে স্নান করতে নেমেছিলেন। মুহূর্তের মধ্যেই অতর্কিতে একটি বিশাল কুমির তাকে আক্রমণ করে। কুমিরের হিংস্র কামড়ে মহিলার শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার নিথর দেহ ভেসে ওঠে নদীর চড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান।

স্থানীয়দের বিস্ময়: “আগে তো কুমির দেখিনি!”
এই ঘটনায় সবচেয়ে বড় প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই নদীতে এর আগে কখনো কুমিরের আক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। এমনকি, তাদের স্মৃতিতে এই নদীতে কুমির দেখা গেছে এমন নজিরও নেই। তাহলে হঠাৎ করে কোথা থেকে এই কুমির এলো এবং এমন ভয়াবহ কাণ্ড ঘটালো, তা ভেবে তারা দিশেহারা। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি এলাকার জনমনে গভীর আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

বনদফতরের পদক্ষেপ: ক্ষতিপূরণ ও তল্লাশি অভিযান
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে বনদফতর। মৃতার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে, নদীতে সাধারণ মানুষের নামার উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বনদফতরের আধিকারিকেরা প্রতিদিন নদীতে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন, ওই কুমিরটিকে খুঁজে বের করার জন্য।

ভিতারকনিকা জাতীয় উদ্যান কুমির সংরক্ষণের জন্য পরিচিত হলেও, লোকালয়ের কাছাকাছি নদীতে এমন অতর্কিত আক্রমণ স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এই ঘটনার পর এলাকার মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন, এই নদী কি এখন আর স্নানের জন্য নিরাপদ? এবং এই কুমির কি একাই এই এলাকায় বিচরণ করছে, নাকি আরও কুমির রয়েছে? বনদফতর কতটা দ্রুত এই রহস্যের সমাধান করতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।