আমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জলপাইগুড়ির অভ্রজ্যোতি! জানালেন আতঙ্কের মুহূর্তের কথা

বৃহস্পতিবার আমেদাবাদে এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় বহু প্রাণহানি হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান টেক-অফের পরপরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের গায়ে আছড়ে পড়ে। বিমানের লেজের অংশ ঢুকে যায় হোস্টেলের ক্যান্টিনে, আর মুহূর্তেই ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এই বিভীষিকাময় ঘটনার ঠিক পাশের আবাসনেই ছিলেন জলপাইগুড়ির ছেলে অভ্রজ্যোতি বিশ্বাস, যিনি অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন মৃত্যুর থাবা থেকে। নিজের চোখের সামনে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা বিমানের সেই ভয়াবহ দৃশ্য এখনও তাঁকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
অভ্রজ্যোতির আতঙ্কের মুহূর্ত
জলপাইগুড়ির কদমতলার বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক বরুণ বিশ্বাসের ছেলে অভ্রজ্যোতি বিশ্বাস বর্তমানে আমেদাবাদের ইউনাইটেড নেশনস মেহেতা কার্ডিয়াক ইনস্টিটিউটে সহকারী চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। বিজে মেডিক্যাল কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর প্রায় চার বছর ধরে তিনি এই আবাসিক এলাকায় বাস করছেন।
ড. বরুণ বিশ্বাস ছেলের নিরাপদে থাকার খবর পেয়ে অনেকটাই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, “ছেলে প্রায়ই ফোনে যোগাযোগ রাখছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ফোন করে জানায়, ওর পাশের আবাসনে বিমান পড়ে গিয়েছে। ভয়াবহ শব্দ, আগুন, ধোঁয়া—সবকিছু ওর চোখের সামনে ঘটেছে। আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।” ছেলের এই প্রত্যক্ষদর্শী বর্ণনা শুনে পরিবারেও নেমে আসে উদ্বেগের ছায়া।
বিমান পরিষেবা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ
এই ঘটনা আবারও বিমান পরিষেবা এবং তার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ড. বরুণ বিশ্বাস এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “বিমান পরিষেবা নিয়ে এখন যথেষ্ট প্রশ্ন উঠছে। দিন দিন যেভাবে দুর্ঘটনার খবর শোনা যাচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।” তিনি আরও বলেন, “মানুষ নির্ভরতার জন্য বিমান পরিষেবায় ভরসা রাখে, অথচ এমন ঘটনা ভবিষ্যতে সেই ভরসা নষ্ট করে দিতে পারে।”
এই দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন অভ্রজ্যোতির পরিবার। একইসঙ্গে, এই ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে, তার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। অভ্রজ্যোতির মতো অনেকেই এই দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হয়েছেন, এবং তাঁদের মানসিক ক্ষত সারতে সময় লাগবে বলেই মনে করা হচ্ছে।