
কর্মক্ষেত্রে বা পার্টিতে মতপার্থক্য, মনোমালিন্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু তারকাদের জীবনে যখন এমন ঘটনা ঘটে, তখন তা আলোচনায় আসে। বলিউডের ‘ভাইজান’ সালমান খানের জীবনেও একদা ঘটেছিল এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা, যা কোনো শুটিং সেটে নয়, বরং একটি পার্টিতে। অভিযোগ, পরিচালক সুভাষ ঘাইয়ের সঙ্গে তার বিবাদ এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, সালমান নাকি তাকে থাপ্পড় মেরেছিলেন। তবে পরের দিনই তাকে ক্ষমা চাইতে হয়। এই ঘটনায় সালমান অভিযোগ করেছিলেন যে, ওই পরিচালক তার সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করেছিলেন, এমনকি তার জুতোয় প্রস্রাবও করে দিয়েছিলেন!
বলিউডের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালক এবং অভিনেতা সুভাষ ঘাইয়ের সঙ্গেই ঘটেছিল এই ঘটনা। সালমান খানের অভিযোগ ছিল যে, একটি পার্টিতে সুভাষ ঘাই তাকে চামচ ও প্লেট দিয়ে মেরেছিলেন এবং তার জুতায় প্রস্রাবও করে দেন। এই চূড়ান্ত অপমানের জেরে রাগে অন্ধ হয়ে সালমান তার গায়ে হাত তোলেন।
২০০২ সালে ‘লহেরন’-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সালমান নিজেই এই বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন। অভিনেতা বলেছিলেন, “আমার মুখের উপর প্লেট দিয়ে মারতে থাকেন সুভাষজি। হঠাৎই ঘাড় চেপে ধরেছিলেন। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। প্রথমে রেগে গিয়ে নিজেই নিজেকে আঘাত করেছিলাম। একটা সময়ে সুভাষ ঘাইয়ের গায়ে হাত তুলে ফেলেছিলাম। কিন্তু পরের দিনই আমি তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলাম।”
এই ঝগড়ার অবসান ঘটে সালমানের বাবা, প্রখ্যাত চিত্রনাট্যকার সেলিম খানের হস্তক্ষেপে। তিনি তার ছেলেকে বলেন সুভাষ ঘাইয়ের কাছে ফোন করে ক্ষমা চাইতে। এই প্রসঙ্গে সেলিম খান একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “ঝগড়ার পরের দিন সকালে আমি চা খাচ্ছি, সালমান আমার কাছে এসে আগের রাতের ঘটনাটি জানায়। আমি ওকে বলি সুভাষ ঘাইয়ের কাছে ফোন করে ক্ষমা চাইতে।”
সেলিম খানের মধ্যস্থতার পর সালমান ও সুভাষ ঘাইয়ের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। সম্পর্কের এই তিক্ততা কাটিয়ে ২০০৮ সালে সুভাষ ঘাই সালমানকে নিয়ে ‘যুবরাজ’ ছবিটি তৈরি করেছিলেন। যদিও সিনেমাটি বক্স অফিসে তেমন চমক তৈরি করতে পারেনি, তবুও এই ঘটনা প্রমাণ করে যে বলিউডে ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকা সত্ত্বেও পেশাদারিত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কীভাবে ফিরে আসতে পারে।
সালমান খানের জীবনের এই অপ্রকাশিত ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে, পর্দার বাইরেও তারকাদের জীবন কতটা নাটকীয় হতে পারে।