তিন সন্তানের সামনেই স্ত্রীকে নৃশংসভাবে ‘খুন’ করে পালাল স্বামী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার আহিরণ মাঠপাড়ায়। মৃতার নাম রেশমি বিবি (২২)। ঘটনা জানাজানি হতেই ওই বাড়ির সামনে এলাকার বাসিন্দাদের ভিড় জমে যায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্ত মসিবুল শেখের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে।
জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর আগে মসিবুল শেখ ও রেশমি বিবির বিয়ে হয়েছিল। তাদের তিনটি সন্তানও আছে। পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন মসিবুল, ফলে বেশিরভাগ সময়ই তিনি কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। গতকাল রবিবার রাতে মসিবুল মুর্শিদাবাদের সুতি এলাকার ওই বাড়িতে ফিরেছিলেন। এরপরই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ শুরু হয়, যা ক্রমে আরও বাড়ে।
অভিযোগ, রেশমি বিবিকে মারধর করেন মসিবুল। তিন সন্তান ভয়ে সিঁটিয়ে ছিল। এদিন সকালের দিকে ফের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ দেখা যায়। অভিযোগ উঠেছে, সেই সময় মসিবুল একটি হাঁসুয়া দিয়ে স্ত্রীর গলায় চালিয়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকেন রেশমি। রক্তে ভেসে যায় মেঝে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে খবর।
সন্তানরা এই ভয়াবহ ঘটনা দেখে আর্তনাদ করে উঠলে বাবা তাদের মুখ বন্ধ না করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এরপরই মসিবুল বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। সন্তানরা প্রতিবেশীদের এই ঘটনার কথা জানালে, ঘরের ভেতর রক্তাক্ত অবস্থায় রেশমিকে পড়ে থাকতে দেখে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেয়। আহিরণ ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
সুতি থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় নাকাচেকিং চলছে। ফোনের লোকেশন ট্রেস করে তাকে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মৃত রেশমি বিবির দিদি, নুরবানু বিবি জানিয়েছেন, গত তিন মাস ধরে মসিবুল ও রেশমির মধ্যে ফোনেই পারিবারিক বিবাদ চলছিল। সেই কারণেই মসিবুল বাড়িও আসেনি। ভিন রাজ্য থেকে টাকাপয়সা পাঠাত না সে। রেশমি বিড়ি বেঁধে তিন সন্তানকে নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছিলেন। মৃতার পরিবার ও প্রতিবেশীরা অভিযুক্তের কঠিন শাস্তির দাবি তুলেছেন। এই ঘটনায় এলাকায় গভীর শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
