পুনে জেলার মাভাল তহসিলের তালেগাঁও দাবাড়ের কুন্ডমালা এলাকা এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল। ইন্দ্রায়ণী নদীর উপর নির্মিত একটি পুরনো লোহার সেতু হঠাৎ ভেঙে পড়ে। তিন মাস ধরে যান চলাচলের জন্য বন্ধ থাকা সত্ত্বেও, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারির অভাবে স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকরা এই সেতু ব্যবহার করে আসছিলেন। প্রবল বর্ষায় নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় জলের তীব্র স্রোতে সেতুটি আর টিকতে পারেনি – মুহূর্তে ভেঙে পড়ে।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, ছুটির দিন হওয়ায় প্রায় ১০০ থেকে ১২০ জন মানুষ নদীর বাড়তে থাকা জলস্তর ও তীব্র স্রোত দেখতে সেতুর উপর জড়ো হয়েছিলেন। অনেকে আবার তাঁদের দু’চাকার যান নিয়েও সেতুর উপরে উঠে পড়েন। এর ফলে সেতুর উপর অত্যধিক চাপ সৃষ্টি হয়। সেই অতিরিক্ত ভার সইতে না পেরেই সেতুটি ভেঙে পড়ে, যার ফলে বহু মানুষ ও যানবাহন নদীতে তলিয়ে যায়।
এই দুর্ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এ পর্যন্ত ২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তবে স্থানীয় বিধায়ক সুনীল শেলকে জানিয়েছেন, অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ। স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, নদীর তীব্র স্রোতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন ভেসে গেছেন। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ৫ থেকে ৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় থানা এলাকার আওতাধীন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় স্থানীয় পুলিশ, দমকল বাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)। উদ্ধারকাজ জোরকদমে চলছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ১০-১৫ জন এখনও আটকে থাকতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি এখনো সঠিক হতাহতের সংখ্যা বলতে পারছি না। তবে প্রশাসন সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। এনডিআরএফ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।”
কেন খোলা ছিল সেতু? প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
তিন মাস আগে এই সেতুটি যান চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হলেও, এটি কীভাবে উন্মুক্ত ছিল এবং পর্যটকদের প্রবেশে কেন বাধা দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই কি এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল?
জানা গেছে, পুনে জেলা প্রশাসন কমলা সতর্কতা জারি করে লোনাভালা, ভূষি বাঁধ-সহ বিভিন্ন পর্যটনস্থল ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। ফলে পর্যটকদের ভিড় কিছুটা কম পরিচিত জায়গাগুলিতে সরে যায়। তালেগাঁওয়ের এই সেতুও তারই একটি উদাহরণ।
