IIT-IIM-পড়ুয়ারা এবার সামলাবেন পুরীর রথযাত্রা, শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপ চালু করল সরকার

পুরীর রথযাত্রা শুধু এক ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি এক বিশাল জনসমুদ্রের ব্যবস্থাপনা। এই বছর সেই ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে দেখা যাবে এক নতুন চমক। দেশের সেরা IIT এবং IIM থেকে আসা পড়ুয়ারা এবার রথের রশিতে টান না দিয়ে, সামলাবেন ভক্তদের বিপুল ভিড়। পুরীর জেলা প্রশাসনের এই অভিনব উদ্যোগকে বলা হচ্ছে ‘পাবলিক সিস্টেম এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইন্টার্নশিপ’, যা ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়াদের সামাজিক শিক্ষার প্রথম হাতেকলমে পাঠ দেবে।
জেলা প্রশাসন মনে করছে, দেশের অন্যতম বৃহত্তম এই উৎসবে জনপ্লাবন সামলানোর অভিজ্ঞতা পড়ুয়াদের বাস্তব জীবনের পাঠের জন্য আদর্শ। পুরীর জেলাশাসক সিদ্ধার্থশঙ্কর সোয়াইন এই উদ্যোগকে ‘নিষ্ঠা এবং সমন্বয়ের এক অনুশীলন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “ভারতের উজ্জ্বলতম মস্তিষ্কের পড়ুয়ারা হাতেকলমে জানুক কীভাবে দেশ গড়ে তোলা হয়, তার জন্য এটাই আদর্শ সময়।”
ব্যবস্থাপনা শিখবে ম্যানেজমেন্টের নতুন প্রজন্ম
নির্বাচিত পড়ুয়ারা ১০ থেকে ১৫ দিন পুরীতে অবস্থান করবেন এবং রথযাত্রার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক সামলানোর দায়িত্ব নেবেন। এর মধ্যে রয়েছে:
নিকাশি উন্নয়ন: সুষ্ঠু পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
জনপ্লাবন ব্যবস্থাপনা: মানুষের আচরণ বিশ্লেষণ করে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা।
জরুরি প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা: আকস্মিক পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।
সেবা স্টল পরিচালনা: ভক্তদের জন্য স্থাপিত পরিষেবা কেন্দ্রগুলি সুষ্ঠুভাবে চালানো।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ভক্তদের আকৃষ্ট করা: প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎসবকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
এত বড় মাপের একটি ধর্মীয় উৎসবে সুপরিকল্পিতভাবে, ধৈর্য ধরে এবং মাথা ঠান্ডা রেখে কীভাবে জনতার ভিড় সামলাতে হয়, সেই অমূল্য অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাবেন এই ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়ারা।
ভবিষ্যতের মডেল রথযাত্রা
প্রশাসনিক কর্তারা আশাবাদী যে, এই ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের অভিজ্ঞতা আগামী দিনে দেশের বড় বড় উৎসব-অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে। এটি শুধুমাত্র একটি শিক্ষামূলক উদ্যোগই নয়, বরং সংস্কৃতির সঙ্গে আধুনিক ব্যবস্থাপনার এক সফল মেলবন্ধন।
ইতিমধ্যেই এই ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। ‘চায়পানি’ নামক একটি সুপরিচিত ব্র্যান্ড এই প্রোগ্রামটিকে এন্ডোর্স করছে, যা এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে। নিঃসন্দেহে, এবারের রথযাত্রা কেবল আধ্যাত্মিকতার নয়, ব্যবস্থাপনাগত উৎকর্ষেরও এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে।