নওশাদকে রুখতে বড় চাল? পীরজাদা কাশেমকে রাজ্য সম্পাদক করল তৃণমূল কংগ্রেস

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের এক চমক। তৃণমূল কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ পদে এলেন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা কাশেম সিদ্দিকী। তাঁকে দলের রাজ্য সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করেছে ঘাসফুল শিবির। একই সঙ্গে, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া শঙ্কর মালাকারকে রাজ্য সহ-সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে নতুন করে তীব্র জল্পনার সৃষ্টি করেছে।

এক সময় কাশেম সিদ্দিকীকে তৃণমূল-বিরোধী হিসেবেই গণ্য করা হত। তাঁর সঙ্গে সিপিএমের ঘনিষ্ঠতাও এর আগে প্রকাশ্যে এসেছে। এমনকি, ২০২১ সালে যখন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (ISF) গঠিত হয়, তখন তিনি আব্বাস ও নওশাদ সিদ্দিকীর পাশেই ছিলেন। নওশাদ গ্রেফতার হওয়ার সময়ও তিনি রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ যে কতটা বদলে যায়, এই ঘটনা তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

অন্যদিকে, ফুরফুরা শরিফের আরেক পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকী বর্তমানে ভাঙড়ের নির্বাচিত বিধায়ক। তিনি বাম ও কংগ্রেসের জোটের সঙ্গে ISF-এর হয়ে নির্বাচনে লড়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে, গত মার্চ মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ফুরফুরা শরিফে যান, তখন তাঁর পাশে দেখা যায় কাশেম সিদ্দিকীকে। সেই সময় নওশাদ বা আব্বাস কেউই সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

ফুরফুরা শরিফের ইফতারের পরদিনও কাশেম সিদ্দিকীকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই পার্ক সার্কাসের ইফতার আসরে দেখা গিয়েছিল। এই দুটি দৃশ্য সামনে আসার পর থেকেই জোরালো গুঞ্জন শুরু হয় – তৃণমূল কি তাহলে কাশেম সিদ্দিকীকে সামনে রেখে ফুরফুরা শরিফের সঙ্গে এক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরির চেষ্টা করছে?

রাজনৈতিক মহলে এখন সবচেয়ে বড় জল্পনা হলো, আগামী দিনে কি নওশাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধেই কাশেম সিদ্দিকীকে প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল? যদিও এই বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের এই পদক্ষেপ যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, তা বলাই বাহুল্য। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফুরফুরা শরিফের ব্যাপক প্রভাবকে কাজে লাগাতে চাইছে তৃণমূল, আর কাশেম সিদ্দিকীর মতো মুখ সেই লক্ষ্য অর্জনের চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারেন। এই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ আগামী দিনে বাংলার রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।