বাংলায় করোনার পরিস্থিতি কেমন? COVID নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

দেশজুড়ে যখন নতুন করে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে এবং বিভিন্ন রাজ্যে কমবেশি সতর্কতা জারি হচ্ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গও এই পরিস্থিতির বাইরে নয়। তবে এই সময়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার বার্তা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাজ্যের প্রায় সব দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন এবং প্রস্তুতির নির্দেশ দেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর দিয়ে বলেন, “করোনা এখনও ভয় পাওয়ার মতো জায়গাতে পৌঁছয়নি।” তিনি মনে করিয়ে দেন যে বর্ষা ও গ্রীষ্মকালে এমনিতেই সর্দি-জ্বর বাড়ে, যার কারণেও অনেকে কোভিড পরীক্ষা করাচ্ছেন। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কোভিড শুনলে ভয় পাই।” বেসরকারি হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি অনিশ্চয়তা প্রকাশ করলেও, সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি সম্পূর্ণ বলে জানান। তিনি আশাবাদী যে মহামারি পরিস্থিতি তৈরি হবে না, কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এমনটাই জানিয়েছে বলে তাঁর ধারণা (যদিও তিনি ক্রস-চেক করার কথা বলেন)।

যদিও সার্বিকভাবে ভয়ের কিছু নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন, মুখ্যমন্ত্রী যাদের কোমরবিডিটি রয়েছে, তাদের বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে, বুক ও হার্টের সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের সাবধানে থাকতে বলেছেন তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনগণের কাছে সরকারি হাসপাতালের উপর ভরসা রাখার আবেদন জানান। তিনি বলেন, “সরকারি হাসপাতালের উপর ভরসা রাখুন। সেখানে চিকিৎসা করান। অহেতুক কোনও অসুখের নামে বেশি টাকা খরচ করবেন না।” তিনি আশ্বাস দেন যে যাদের সত্যিই প্রয়োজন, তারা সরকারি হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা পাবেন এবং সেখানে প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকরণ ও ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বর্তমানে ভ্যাকসিনও সহজলভ্য এবং অনেকেই তা গ্রহণ করেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে নতুন করে ৩৫৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গুজরাট শীর্ষে, যেখানে একদিনে ১৫৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ৫৭ জন আক্রান্ত নিয়ে কর্নাটক দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আর ৫৪ জন আক্রান্ত নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সম্পর্কে ইএসআই মানিকতলার প্রাক্তন নোডাল অফিসার ডঃ সায়ন মিশ্র একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, করোনার যে নতুন ভ্যারিয়েন্টটি এখন দেখা যাচ্ছে, তা ওমিক্রনের একটি পরিবর্তিত রূপ। এটি বেশি সংক্রমণযোগ্য হলেও গুরুতর অসুস্থতা বা মৃত্যুর দিকে পরিচালিত করে না। এই তথ্য কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সব মিলিয়ে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা স্পষ্ট – অযথা আতঙ্কিত না হয়ে, বিশেষ করে যাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি আছে, তাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখতে হবে। রাজ্য প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।