হানিমুনে গিয়ে স্বামীকে খুন? ‘আমার মেয়ে নির্দোষ’, দাবি করলেন অভিযুক্ত তরুণীর বাবা

টুকটুকে লাল লেহঙ্গায় সেজে হাসিমুখে বিয়ের ফটোসেশন করেছিল সোনম। মেয়েকে খুশি দেখে সেদিন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিলেন বাবা। কিন্তু সেই আনন্দ মুহূর্তের মধ্যেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হলো যখন হানিমুনে গিয়ে স্বামী রাজা রঘুবংশীকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হলো সেই মেয়েকেই। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ভারতের মেঘালয় জুড়ে তোলপাড় চলছে।
তবে এই অভিযোগে সুর চড়িয়েছেন সোনমের বাবা দেবী সিং। তিনি কিছুতেই মানতে পারছেন না যে তাঁর মেয়ে ভাড়াটে খুনি দিয়ে জামাইকে খুন করাতে পারে। উল্টে তিনি মেঘালয় পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। দেবী সিং জোর দিয়ে বলেছেন, “আমার মেয়ে নির্দোষ। আমি ওকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করি। ও এ কাজ করতেই পারে না। দুই পরিবারের মতামত নিয়েই ওরা বিয়ে করেছে। মেঘালয় সরকার প্রথম থেকেই মিথ্যা কথা বলছে।”
সিবিআই তদন্তের দাবি, বাবার আত্মবিশ্বাস
দেবী সিং এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “সোনম নিজেই উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে একটি ধাবায় পৌঁছায় রবিবার রাতে এবং সেখান থেকে ওর ভাইকে ফোন করে। এরপর পুলিশ গিয়ে ওকে উদ্ধার করে। আমার মেয়ে কেন ওর স্বামীকে খুন করবে? মিথ্যা গল্প ফাঁদছে পুলিশ।” তাঁর কথায়, সোনম নির্দোষ এবং তাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
কী ঘটেছিল হানিমুনে?
ঘটনার সূত্রপাত ১৯ মে। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশী বিয়ের পর ২০ মে স্ত্রী সোনমকে নিয়ে হানিমুনে মেঘালয়ে গিয়েছিলেন। এরপর থেকেই সোনম নিখোঁজ ছিলেন। তাকে খুঁজে বের করতে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছিল। এমনকি, সোনমকে বাংলাদেশে পাচার করা হতে পারে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছিল।
কিন্তু গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দেয় গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে সোনমের গ্রেপ্তারির খবর। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সোনম অন্য একজনকে ভালোবাসতেন এবং সেই কারণেই ছক কষে স্বামী রাজাকে খুন করেন। এ কাজে ভাড়াটে গুণ্ডাও ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সোনমসহ মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখছে।
রহস্যের জট কি খুলবে?
মেয়ের বাবার এই দৃঢ় দাবি এবং পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই দুইয়ের মধ্যে রহস্যের জট ঠিক কবে খুলবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সোনম কি সত্যিই অপরাধী, নাকি তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার? সিবিআই তদন্তের দাবি মেনে নেওয়া হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্তই এই রহস্যের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।