“২০ টাকার মিষ্টির প্যাকেট প্রসাদ বলে চালাচ্ছেন মমতা”-জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ নিয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু

দিঘার নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ বিতরণ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবার আবারও বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগকে তিনি ‘হিন্দুদের আস্থায় আঘাত’ বলে অভিহিত করেছেন এবং দাবি করেছেন, স্থানীয় দোকানের ২০ টাকার মিষ্টিকে জগন্নাথদেবের মন্দিরের প্রসাদ বলে চালানো হচ্ছে।

শুভেন্দু অধিকারীর ‘বিস্ফোরক’ অভিযোগ:

শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্যাড়া আর গজা। অরিজিনাল হিন্দু হলে প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করবেন না। এটা হিন্দুদের আস্থায় আঘাত।” তার এই মন্তব্য নতুন করে রাজনৈতিক তরজা সৃষ্টি করেছে। তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “আপনি জমজমের পানি জলের ফ্যাক্টরি থেকে পাঠাতে পারবেন?” এই প্রশ্ন উত্থাপন করে তিনি রাজ্যের উদ্যোগের ধর্মীয় বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

আগের অভিযোগ এবং রাজ্য সরকারের জবাব:

উল্লেখ্য, এর আগেও শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছিলেন যে, ‘প্রসাদের নামে স্থানীয় মিষ্টি দোকান থেকে গজা, পেঁড়া নিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে, দিঘা থেকে আসছে না।’ সেই অভিযোগের জবাবে রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন এবং তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু জানিয়েছিলেন যে, জগন্নাথ দেবকে নিবেদিত খোয়া ক্ষীর প্রতিটি প্রসাদে মিশবে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে দিঘার মন্দির থেকে এই খোয়া বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হবে, যেখানে স্থানীয় মিষ্টির দোকানে তা মিশিয়ে মিষ্টি তৈরি হবে। তারা আরও জানিয়েছিলেন যে, মিষ্টির গুণমান বজায় রাখতে কোয়ালিটি ইন্সপেক্টরও রাখা হয়েছে।

বিতর্কের নতুন মাত্রা:

রাজ্য সরকারের এই ব্যাখ্যার পরেও শুভেন্দু অধিকারীর নতুন করে ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্যাড়া’ এবং ‘হিন্দুদের আস্থায় আঘাত’ সংক্রান্ত অভিযোগ, এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি সরাসরি প্রসাদের ধর্মীয় বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের কাছে এই প্রসাদ গ্রহণ না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তার ‘জমজমের পানি’ সংক্রান্ত মন্তব্যও এই বিতর্কের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে, যা ধর্মীয় সংবেদনশীলতার বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে।

রাজনৈতিক মহলে তোলপাড়:

শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগ রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপ্রচার’ বলে আখ্যায়িত করলেও, এই বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের মধ্যে, একটি প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আসন্ন দিনগুলিতে এই বিতর্ক কোন দিকে মোড় নেয় এবং রাজ্য সরকার এই নতুন অভিযোগের কী জবাব দেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy