পহেলগাঁও হামলা: ২৬ প্রাণহানির পর দ্রুত ‘অ্যাকশনে’ পিএম মোদী, বিমানবন্দরেই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলা এবং তাতে ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় গোটা দেশ যখন শোকে স্তব্ধ, তখন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গেরও তিন জন বাসিন্দা নিহত হয়েছেন, যা বাংলার মানুষকেও নাড়িয়ে দিয়েছে। হামলার খবর পাওয়া মাত্রই সৌদি আরব সফর কাটছাঁট করে দেশে ফিরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং দিল্লিতে নেমেই তিনি ‘অ্যাকশনে’ নেমেছেন।

বিমানবন্দরেই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক:

দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণ করার পরপরই প্রধানমন্ত্রী মোদী একটি উচ্চপর্যায়ের জরুরি বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। এই বৈঠক থেকে প্রধানমন্ত্রী কড়া বার্তা দিয়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, যারা এই ঘৃণ্য অপরাধ করেছে, তারা কোনওভাবেই রেহাই পাবে না। দিল্লি পৌঁছেই প্রধানমন্ত্রীর এই দ্রুত পদক্ষেপ ঘটনাটির গুরুত্ব এবং সরকারের কঠোর মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়।

আরও এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আজ:

বিমানবন্দরের বৈঠকের পরই প্রধানমন্ত্রী আজ বেলা ১১টায় তাঁর বাসভবনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবেন। এটি সম্ভবত নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট বৈঠক, যেখানে হামলার প্রেক্ষিতে পরবর্তী কৌশল এবং পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। সমগ্র দেশ এই বৈঠকের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে।

আন্তর্জাতিক সমর্থন:

পহেলগাঁওয়ের এই বর্বরোচিত হামলার পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে ভারতের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়াও জার্মানি, রাশিয়া এবং ইজরায়েলের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলিও এই ঘটনায় ভারতের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানা গেছে।

উপত্যকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইতিমধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীর পৌঁছেছেন। সেখানে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং উপরাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন।

জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাধারণ নাগরিকদের ওপর যেসব হামলা হয়েছে, তার তুলনায় এই আক্রমণ অনেক বড় এবং এটি অবিশ্বাস্যভাবে হতবাক করার মতো ঘটনা। পর্যটকদের ওপর এই হামলাকে তিনি “জঘন্য, অমানবিক ও পাশবিক” বলে আখ্যা দিয়েছেন।

কাশ্মীরে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক জঙ্গি হামলার ঘটনায় দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ক্রীড়া, চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশে ফিরেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই দ্রুত এবং ধারাবাহিক পদক্ষেপ দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দৃঢ় সঙ্কল্পকেই তুলে ধরছে।