“বোর্ডিং স্কুল ফি নেবে বিটকয়েনে”-জেনেনিন সেই স্কুলের নাম ও ঠিকানা?

ক্রিপ্টোমুদ্রার জগতে আরও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। স্কটল্যান্ডের একটি ঐতিহ্যবাহী বোর্ডিং স্কুল, লোমন্ড স্কুল, তাদের টিউশন ফি হিসেবে বিটকয়েন গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রচলিত মুদ্রার পাশাপাশি ডিজিটাল মুদ্রায় পেমেন্ট গ্রহণকারী এটিই সম্ভবত প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
হেলেনসবার্গের এই স্বনামধন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিছু অভিভাবকের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতেই তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। লোমন্ড স্কুলে প্রতি বছর টিউশন ফি বাবদ প্রায় ৩৮ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত খরচ হয়।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলটি চলতি বছরের শরৎকাল থেকেই বিটকয়েনে টিউশন ফি নেওয়া শুরু করবে। তবে ক্রিপ্টোমুদ্রার অস্থির বাজার পরিস্থিতির ঝুঁকি কমাতে প্রাথমিকভাবে এই বিটকয়েনকে ইউকে পাউন্ডে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
লোমন্ড স্কুল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, বিটকয়েনে ফি গ্রহণ করা তাদের ‘স্বাধীন চিন্তাভাবনা ও উদ্ভাবন নীতি’র সঙ্গতিপূর্ণ। তবে বিটকয়েন ছাড়া অন্য কোনো ক্রিপ্টোমুদ্রা তারা গ্রহণ করবে না। স্কুলটি নিজেদেরকে যুক্তরাজ্যে ক্রিপ্টোমুদ্রায় টিউশন ফি গ্রহণকারী প্রথম বেসরকারি স্কুল হিসেবে দাবি করেছে।
লোমন্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক ক্লেয়ার চিশলম এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই স্কুল অনুসন্ধিৎসু, চিন্তাবিদ, যোগাযোগ স্থাপনকারী এবং ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত একটি প্রজন্মকে লালন করে এসেছে। আর এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে টেলিভিশনের উদ্ভাবক জন লোগি বেয়ার্ড আমাদের স্কুলেরই একজন প্রাক্তন ছাত্র।”
ঐতিহাসিক ‘লার্চফিল্ড স্কুল’ ও ‘সেন্ট ব্রাইডস স্কুল ফর গার্লস’-এর একত্রীকরণের মাধ্যমে ১৯৭৭ সালে হেলেনবার্গে লোমন্ড স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই স্কুলে তিন বছর বয়স থেকে আঠারো বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিটি বিটকয়েন লেনদেন “নিরাপদ, স্বচ্ছ ও আইনসঙ্গত” হবে। এবং এই লেনদেনগুলো যুক্তরাজ্যের আর্থিক নিয়মকানুন, যার মধ্যে অর্থ পাচার রোধ ও কর সম্মতির মতো বিষয়গুলিও অন্তর্ভুক্ত, তা সম্পূর্ণরূপে পূরণ করবে।
উল্লেখ্য, বিটকয়েন এক প্রকার ডিজিটাল মুদ্রা, যা কোনো কেন্দ্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় না। বিবিসি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিটকয়েনের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছালেও এই ডিজিটাল মুদ্রাটি অত্যন্ত অস্থির এবং ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ইচ্ছানুযায়ী এর মূল্য দ্রুত বাড়তে বা কমতে পারে। লোমন্ড স্কুলের এই পদক্ষেপ শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।