শক্তিশালী ভূমিকম্পে ছারখার সবকিছু, মায়ানমারে তীব্র কম্পনে ধসে পড়ল ভবন, দেখুন ভিডিও

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, যার মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭.৭। কিছু সময় পর আরও একটি কম্পন অনুভূত হয়, যার মাত্রা ছিল ৬.৪। এই ভূমিকম্পটি মিয়ানমারের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককসহ অন্যান্য স্থানেও অনুভূত হয়েছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ২৮ মার্চ স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৫০ মিনিটে সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ঘটে। তবে ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পের প্রভাব

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককসহ বিভিন্ন অঞ্চলেও এই শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ব্যাংকক পোস্ট জানিয়েছে, মিয়ানমারে ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে এবং এর ফলে ব্যাংককে কম্পন অনুভূত হয়েছে। কিছু প্রতিবেদনে ভূমিকম্পের তীব্রতায় ব্যাংককের চাতুচাক এলাকায় নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ার ভিডিও ফুটেজও প্রকাশিত হয়েছে।

ভূমিকম্পের ফলে ব্যাংককের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল এবং আতঙ্কিত মানুষজন বিভিন্ন ভবন থেকে বাইরে বের হয়ে আসেন। কিছু মেট্রো ও হালকা রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে এবং থাই কর্তৃপক্ষ ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন করছে।

আফটারশক ও থাই সরকারের প্রতিক্রিয়া

এদিকে, আল জাজিরা জানিয়েছে, ব্যাংককের চাতুচাক এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে লোকজন আটকা পড়ার খবর পাওয়া গেছে। থাই ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ বিভাগ জানাচ্ছে, ব্যাংককসহ থাইল্যান্ডের অন্যান্য স্থানেও ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে। থাই প্রধানমন্ত্রী পেতাংতার্ন সিনাওয়াত্রা, ভূমিকম্পের পর জরুরি বৈঠক করার জন্য দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ ফুকেটে তার সরকারি সফর স্থগিত করেছেন।

মিয়ানমারে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদো থেকে সংবাদদাতা এএফপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের তীব্রতায় রাস্তা-ঘাট স্তব্ধ হয়ে গেছে এবং কিছু ভবনের ছাদ থেকে টুকরো ভেঙে পড়েছে। তবে দেশটির গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে।

এছাড়া, মিয়ানমারের ভূমিকম্পের পরবর্তী আফটারশক বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে জরুরি উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে।

ভূমিকম্পের ইতিহাস ও প্রভাব

মিয়ানমারে ভূমিকম্প সাধারণত ঘটে, তবে এমন শক্তিশালী ভূমিকম্পের তীব্রতা অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষত, থাইল্যান্ডের মতো ভূমিকম্পের জন্য সাধারণত কম প্রবণ দেশগুলোর ওপর এর প্রভাব গুরুতর হতে পারে।

এদিকে, থাই কর্তৃপক্ষ ভূমিকম্পের পরবর্তী আফটারশক এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনার পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে ভূমিকম্পের সতর্কতা বৃদ্ধি পেতে পারে।