ব্যাংককে ভূমিকম্পে ৩০তলা ভবনে ধস, আটকা পড়েছে ৪৩ জন, জারি জরুরি অবস্থা

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং চীনে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল সাগাইং শহর, যা রাজধানী নেপিদো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৫০ মিনিটে আঘাত হানে। ইউএসজিএস-এর মতে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, ১০ কিলোমিটার গভীরে।

ব্যাংককে ভয়াবহ ভবন ধস

ভূমিকম্পের কারণে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন ৩০ তলা বিশিষ্ট আকাশচুম্বী ভবন ধসে পড়েছে। এতে ৪৩ জন শ্রমিক আটকা পড়েছেন বলে পুলিশ ও চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন। শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর পুরো শহর কেঁপে ওঠে, এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এ ঘটনায় থাই কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে, এবং প্রধানমন্ত্রী পাতোংতার্ন সিনাওয়াত্রা এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।

ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ও ভবন

নেপিদো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদক জানিয়েছেন, মিয়ানমারে ভূমিকম্পের ফলে বিভিন্ন রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অনেক ভবনের ছাদ থেকে আস্তরণ খসে পড়েছে। ব্যাংককে ভূমিকম্পের কারণে ভবনগুলো দুলতে শুরু করে এবং কয়েকটি ভবনের জানালা ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ব্যাংককের মানুষজন রাস্তায় বের হয়ে এসে জড়ো হচ্ছেন।

চীনে কম্পন অনুভূত হলেও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই

চীনের বিভিন্ন অঞ্চলেও ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত খবর পাওয়া যায়নি।

মিয়ানমারে ভূমিকম্পের ইতিহাস

মিয়ানমার একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ, যেখানে ১৯৩০ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে সাগাইং ফল্টের কাছে ৭ বা তার বেশি মাত্রার ছয়টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। থাইল্যান্ডের ক্ষেত্রে, ভূমিকম্প কম অনুভূত হলেও, বেশিরভাগ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মিয়ানমার থেকেই হয়। থাইল্যান্ডের অধিকাংশ ভবন ভূমিকম্প সহ্য করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয়, ফলে সেখানে ব্যাপক কাঠামোগত ক্ষতি হতে পারে।

এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এবং উদ্ধারকাজে সাহায্যের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। দুর্বল অবকাঠামো এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা থাইল্যান্ডে আরও বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করছে।