মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্প, তীব্র কম্পনে ধসে পড়ল ব্রিজ, দেখেনিন ভিডিও

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, যা দেশটির বেশ কয়েকটি অঞ্চলকে তোলপাড় করে দিয়েছে। পরে একটি আরেকটি কম্পন অনুভূত হয়, যার মাত্রা ছিল ৬.৪। এই ভূমিকম্পের ফলে দেশটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ঔপনিবেশিক আমলের সেতু ধসে পড়েছে

ভূমিকম্পে মিয়ানমারের ইরাবতী নদীর ওপর নির্মিত আভা সেতুটি ধসে পড়েছে। ৯১ বছরের পুরনো এই সেতুটি, যা পুরাতন সাগাইং সেতু নামেও পরিচিত, ব্রিটিশরা নির্মাণ করেছিল। সেতুর ধ্বংসস্তূপে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, এবং সাগাইং ও মান্দালয় অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

ভবন ধ্বংস ও রাস্তাঘাটে ব্যাপক ক্ষতি

ভূমিকম্পের ফলে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোসহ মান্দালয় শহরে বেশ কিছু ভবন ভেঙে পড়েছে। রাস্তাঘাট স্তব্ধ হয়ে গেছে, এবং অনেক জায়গায় ভবন থেকে ছাদের টুকরো পড়ে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার গভীরে কম্পনটির উৎপত্তি হয়েছিল। ভূমিকম্পের কারণে অনেক ভবনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে, যার ফলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

দ্বিতীয় ভূমিকম্প ও ক্ষতির প্রতিবেদন

মিয়ানমারে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে নির্দিষ্ট কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে, বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে রাস্তাঘাট স্তব্ধ হয়ে গেছে এবং ভবনগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, মিয়ানমারে এই ধরনের শক্তিশালী ভূমিকম্প সাধারণ ঘটনা নয়, তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১৯৩০ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে এ ধরনের একাধিক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল এবং দুর্বল চিকিৎসা ব্যবস্থা

মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পর, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা পৌঁছানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের দুর্বল চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং সীমিত অবকাঠামো এলাকাগুলিতে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোকে কঠিন করে তুলছে। বিশেষত, ভূমিকম্পের কারণে গ্রামাঞ্চলে দ্রুত উদ্ধারকাজ এবং চিকিৎসার জন্য আরও সহায়তা প্রয়োজন।

পূর্ববর্তী ভূমিকম্পের স্মৃতি

এর আগে ২০১৬ সালে মধ্য মিয়ানমারের প্রাচীন শহর বাগানে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল, যার ফলে তিনজন নিহত হয়েছিলেন। সেই ভূমিকম্পে পর্যটন কেন্দ্রের চূড়া ভেঙে পড়েছিল এবং মন্দিরের দেয়ালও ধসে পড়েছিল।

মিয়ানমারে ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও স্থানীয় জনগণের সাহসিকতা এবং সহায়তার মাধ্যমে পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ চলছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, দেশের দুর্বল অবকাঠামো এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ আরও বড় হতে পারে।