লন্ডনে গিয়ে ব্রিটিশদের কাজের প্রশংসা করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জগদ্দল বিজেপি জেলা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ থেকে লন্ডনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ব্রিটিশ যুগের প্রশংসা করছেন। ভাবা যায়! ও’নার এই মন্তব্য দেশবিরোধী। তিনি বাংলার সেই মহান মনীষীদের অপমান করেছেন, যারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে ভারতবর্ষকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন।”

শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের মন্তব্য করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবমাননা করেছেন। আমি চাই, বিদেশ মন্ত্রক অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর পাসপোর্ট বাতিল করে তাঁকে ভারতে ফিরিয়ে আনুক।”

ভাটপাড়ায় অর্জুন সিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে অভিযোগ

শুভেন্দু অধিকারী বৃহস্পতিবার রাতে অশান্ত ভাটপাড়ায় গিয়ে বিজেপি নেতা অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন এবং রাজ‍্যের শাসকদল ও পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “তৃণমূল ও পুলিশ চক্রান্ত করে অর্জুন সিংকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে চাইছে। ওরা ভালো করেই জানে ভাটপাড়া হল অর্জুনের গড়। সেই কারণে রাজনৈতিকভাবে দমাতে না-পেরে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।”

এদিন শুভেন্দু আরও বলেন, “আমাদের কাছে নির্দিষ্ট তথ্য আছে যে, লন্ডন থেকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন অর্জুন সিংকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করা হতে পারে। যদি পুলিশ প্রশাসন সেই সাহস দেখায়, তাহলে ব‍্যারাকপুরের কমিশনারের অফিস ঘেরাও করব আমরা। প্রয়োজন হলে শিল্পাঞ্চলে বনধ, হরতালের পথে যেতেও বাধ্য হব।”

অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

ভাটপাড়ায় বোমা-গুলি কাণ্ডে প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “এটা নতুন কিছু নয়। 2019 সাল থেকে অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে 100-রও বেশি মামলা রয়েছে। তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে রাজনৈতিক কারণে প্রতিনিয়ত হেনস্থা করা হচ্ছে। তৃণমূল ভাবছে, অর্জুন সিংকে জেলে বন্দি করে তাদের আধিপত্য বাড়াবে। কিন্তু সেটা কখনই হতে দেবে না বিজেপি।”

এছাড়া, শুভেন্দু অধিকারী ভাটপাড়ায় অর্জুন সিংয়ের বাড়ির সামনে বোমাবাজির ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং এই ঘটনার যথাযথ তদন্তের জন্য আবেদন করেছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে মমতার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ

শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি এই আক্রমণের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এই বিতর্ক যে আরও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়বে তা বলাই বাহুল্য।