বিশেষ: জলের নিচে তলিয়ে যেতে পারে ব্যাংকক, জেনেনিন কি বলছে বিশেষজ্ঞরা?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক সমুদ্রের নিচে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির জলবায়ু পরিবর্তন অফিসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। বুধবার তিনি এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে সতর্ক করেছেন যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে রাজধানী স্থানান্তরের বিষয়টি বিবেচনা করতে হতে পারে।

থাইল্যান্ড সরকারের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিভাগের উপ-মহাপরিচালক পাভিচ কেসাভাওং বলেন, “বিশ্ব এখন উষ্ণায়নের যে পথে রয়েছে, তার সঙ্গে ব্যাংকক খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে না।” তিনি উল্লেখ করেন, প্রাক-শিল্প স্তর থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ইতিমধ্যে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে অভিযোজন এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

পাভিচ সতর্ক করে বলেন, “আমি মনে করি আমরা ইতিমধ্যে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে আছি। এখন আমাদের ফিরে আসতে হবে এবং অভিযোজন সম্পর্কে ভাবতে হবে। যদি আমরা আমাদের বর্তমান পরিস্থিতিতে থাকি, তাহলে কল্পনা করা যায়, ব্যাংকক জলের নিচে থাকবে।”

ব্যাংকক শহরটি ইতিমধ্যেই বর্ষাকালে বন্যার সমস্যায় জর্জরিত। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এই সমস্যা আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নেদারল্যান্ডসের মতো ডাইক নির্মাণের মাধ্যমে শহরটিকে রক্ষার চিন্তাভাবনা চলছে। তবে পাভিচ মনে করেন, এই বিষয়টি পুরোপুরি অনুমানভিত্তিক এবং এগোনোর আগে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

তিনি বলেন, “ডাইক নির্মাণ একটি ভালো অপশন হতে পারে, তবে এটি অনেক বেশি জটিল। রাজধানী, সরকারি এলাকা এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রকে আলাদা করার বিষয়টিও বিবেচনা করা যেতে পারে।”

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং এর ফলে উপকূলীয় শহরগুলির উপর প্রভাব বিশ্বব্যাপী একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংককের মতো শহরগুলির জন্য এই সমস্যা মোকাবিলা করা এখন সময়ের দাবি। থাইল্যান্ড সরকার যদি দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়, তবে ভবিষ্যতে রাজধানী স্থানান্তরের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতা এবং স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোজন কৌশল গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংককের ভবিষ্যৎ রক্ষায় এখনই সঠিক পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগ প্রয়োজন, যাতে এই ঐতিহাসিক শহরটি ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়।