“৩১ মার্চের মধ্যে নকশালমুক্ত হবে ভারত”-জোর দাবি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র

ছত্তিশগড়ের বস্তার অঞ্চলে বৃহস্পতিবার দুটি পৃথক এনকাউন্টারে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ২২ জন নকশাল নিহত হয়েছেন। বিজাপুর ও কাঙ্কের জেলায় এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, বিজাপুরে ১৮ জন এবং কাঙ্কেরে ৪ জন নকশাল খতম হয়েছে। তবে এই সাফল্যের মাঝেও দুঃসংবাদ—বিজাপুরের এনকাউন্টারে একজন ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি) জওয়ান শহিদ হয়েছেন।
বিজাপুরে ১৮ নকশাল নিহত
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিজাপুর ও দান্তেওয়াড়া জেলার সীমান্তবর্তী জঙ্গলে সকাল ৭টা নাগাদ নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে নকশালদের সংঘর্ষ শুরু হয়। গাঙ্গালুর থানা এলাকায় নকশালবিরোধী অভিযানে নামা একটি যৌথ দলের সঙ্গে নকশালদের মুখোমুখি সংঘাত হয়। এতে ১৮ জন নকশাল নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই অভিযানে একজন ডিআরজি জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন।
কাঙ্কেরে ৪ নকশাল খতম
অন্যদিকে, কাঙ্কের ও নারায়ণপুর জেলার সীমান্তবর্তী জঙ্গলে আরেকটি এনকাউন্টারে ৪ জন নকশাল নিহত হয়েছেন। কাঙ্কেরের পুলিশ সুপার ইন্দিরা কল্যাণ আলেসেলা জানিয়েছেন, ডিআরজি ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর যৌথ দল অভিযানে থাকাকালীন নকশালদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ৪ নকশাল নিহত হয় এবং তাদের কাছ থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই ঘটনাকে ‘নকশালমুক্ত ভারত’ অভিযানের দিকে বড় পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ তিনি লিখেছেন, “নিরাপত্তা বাহিনী আরেকটি বড় সাফল্য অর্জন করেছে। ৩১ মার্চ ২০২৬-এর মধ্যে দেশকে নকশালমুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে চলেছি।” তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করে নিহত জওয়ানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
চলতি বছরে ১০৫ নকশাল নিহত
ছত্তিশগড় পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত ১০৫ জন নকশাল নিহত হয়েছে। এর মধ্যে বস্তার বিভাগে ৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে বিজাপুর ও কাঙ্কের অন্যতম। পুলিশ জানিয়েছে, এই অঞ্চলগুলি নকশালদের দ্বারা অধ্যুষিত এবং এখানে তাদের একাধিক ঘাঁটি রয়েছে।
চলছে তল্লাশি অভিযান
দুটি এনকাউন্টার স্থলেই নিরাপত্তা বাহিনী তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের আশঙ্কা, নকশালদের অন্যান্য দল এখনও জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে পারে।
নকশালবিরোধী লড়াইয়ে গতি
এই ঘটনা নকশালবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রমাণ। তবে জওয়ানের শহিদ হওয়া দেশবাসীকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, এই লড়াইয়ের পথ কঠিন। সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী আশা করছে, এই ধরনের অভিযানের মাধ্যমে নকশালদের কোমর ভেঙে দেওয়া সম্ভব হবে।