
মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর “ভালো আলোচনা” হয়েছে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শীঘ্রই থামতে পারে। এছাড়া, রাশিয়ার কুরস্কে ইউক্রেনীয় সেনাদের অবরুদ্ধ হওয়ার খবরকে কেন্দ্র করে তিনি পুতিনের কাছে ইউক্রেনীয় সেনাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য “জোর অনুরোধ” জানিয়েছেন। তবে ট্রাম্পের এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।
ট্রাম্পের বক্তব্য
সামাজিক মাধ্যমের এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “গতকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আমাদের ভালো আলোচনা হয়েছে। এবং সম্ভাবনা আছে, ভয়ানক ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত থামবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, “কিন্তু এ মুহূর্তে, রুশ সেনাদের দ্বারা কয়েক হাজার ইউক্রেনীয় সেনা পুরোপুরি অবরুদ্ধ আছে এবং খুব খারাপ ও অরক্ষিত অবস্থায় আছে। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জোর অনুরোধ জানিয়েছি, তাদের যেন ছাড় দেওয়া হয়। এটি হবে ভয়ঙ্কর গণহত্যা, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেখা যায়নি। সৃষ্টিকর্তা তাদের সবার মঙ্গল করুক।”
সামরিক বিশ্লেষকদের প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন সামরিক বিশ্লেষক মাইকেল কোফম্যান। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনীয় সেনারা কুরস্ক থেকে নিজেরাই সরে যাচ্ছে এবং তারা অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে পড়েনি। যদিও সরে যাওয়ার সময় কিছু সেনা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ছেন, তবে গণহারে রুশ সেনারা তাদের ঘিরে ধরেছে এমন কোনো প্রমাণ নেই।
ইউক্রেনের এক সামরিক কর্মকর্তাও দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, “সাত মাস পর, আমরা শুধুমাত্র সরে যাচ্ছি। সেখানে কোনো অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটেনি।”
রাশিয়ার যুদ্ধ ব্লগারদের বক্তব্য
রাশিয়ার কিছু যুদ্ধ ব্লগারও ট্রাম্পের দাবিকে সমর্থন করেননি। তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় সেনাদের গণহারে ঘিরে ফেলার যে তথ্য রুশ কর্মকর্তারা দিচ্ছেন, তার কোনো আলামত তারা দেখতে পাননি।
যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও চলমান এবং উভয় পক্ষই কৌশলগত সুবিধা অর্জনের চেষ্টা করছে। কুরস্কে ইউক্রেনীয় সেনাদের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক চললেও, যুদ্ধের সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল। ট্রাম্পের এই মন্তব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা জাগালেও, বাস্তবে এর প্রভাব কতটা হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শীঘ্রই থামতে পারে এবং পুতিনের সঙ্গে তাঁর আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। তবে এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা। যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি এবং কুরস্কে ইউক্রেনীয় সেনাদের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক এখনও চলছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন এই যুদ্ধের পরবর্তী অধ্যায়ের দিকে।