
মধ্যমগ্রামে নাবালিকা অপহরণ কাণ্ডে সিপিএম নেতা অরূপ বসু (ওরফে কুরু), তাঁর পুত্র অয়নাভ বসু এবং সহযোগী রাহুল হালদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার বারাসত আদালত ধৃতদের পাঁচ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লি এলাকার ১৫ বছরের এক নাবালিকাকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, সিপিএম নেতা অরূপ বসুর পুত্র অয়নাভ বসু এবং তাঁর সহযোগী রাহুল হালদার নাবালিকাটিকে অপহরণ করেছে। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, অপহৃত নাবালিকাকে দার্জিলিংয়ের সিটং এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে পুলিশ বুধবার নাবালিকাটিকে উদ্ধার করে।
তদন্তে আরও উঠে আসে, এই অপহরণ কাণ্ডের সঙ্গে সিপিএম নেতা অরূপ বসুরও যোগ রয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার পুলিশ অরূপ বসুকে গ্রেফতার করে। অপহৃত নাবালিকাকে মধ্যমগ্রামে আনা হয় এবং মেডিক্যাল পরীক্ষার পর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে তাকে হোমে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অরূপ বসু এলাকায় প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত। তাঁর পুত্র অয়নাভও বাবার রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে এলাকায় দাপট দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য আহমেদ আলি খান এই ঘটনায় বলেন, “অপহরণের পরে অরূপ বসু জানতে পেরেছিল নাবালিকাটি দার্জিলিংয়ে রয়েছে। তিনি পুলিশকে এই তথ্য দিয়েছিলেন। পুলিশ সেই তথ্যের ভিত্তিতে নাবালিকাটিকে উদ্ধার করেছে। তবে পুলিশের ধারণা, এই ঘটনার সঙ্গে অরূপ বসুর যোগ রয়েছে। সে কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব এই ঘটনাকে ন্যক্কারজনক বলে উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন, “এক নাবালিকার অপহরণে সিপিএম নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই ধরনের ঘটনায় কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে এবং আরও তথ্য পাওয়া গেলে তা প্রকাশ করা হবে। এই ঘটনায় এলাকায় রাজনৈতিক উত্তাপ তৈরি হয়েছে এবং স্থানীয়রা ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন।