
গুজরাটের ভদোদরা শহরে মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া গাড়ি চালানোর এক মর্মান্তিক ঘটনায় এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে এবং তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৩০ মিনেট নাগাদ কারেলিবাগ এলাকায় ঘটে। ২০ বছর বয়সী অভিযুক্ত রক্ষিত চৌরাসিয়া উত্তর প্রদেশের বারাণসীর বাসিন্দা এবং ভদোদরার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের ছাত্র। তাকে ঘটনার পর পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
ঘটনার সময় একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যাতে দেখা গেছে অভিযুক্ত চালক মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি থেকে নেমে ‘আরও একটা রাউন্ড’ বলে চিৎকার করছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, কালো টি-শার্ট ও ধূসর প্যান্ট পরা রক্ষিত গাড়ির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় হাঁটছেন। লোকজন তাকে ঘিরে ধরলে তিনি ‘ওঁ নমঃ শিবায়’ জপ শুরু করেন। গাড়ির আরেক যাত্রী মিত চৌহান, যিনি গাড়ির মালিক এবং ভদোদরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তিনি গাড়ি থেকে নেমে বলছেন, ‘আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম না’। তাকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়িটি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ছুটছিল। গাড়িটি প্রথমে দুটি স্কুটারকে ধাক্কা মারে, যার ফলে স্কুটার আরোহীরা মাটিতে পড়ে যান। এরপর গাড়িটি তাদের টেনে নিয়ে যায়। হেমানি প্যাটেল নামে এক মহিলা, যিনি তাঁর মেয়ের সঙ্গে হোলির রং কিনতে বেরিয়েছিলেন, ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাকি তিনজন আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা রক্ষিতকে মারধর করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত চালক মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়েছে।
এই ঘটনায় শহরজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। স্থানীয়রা নিরাপদ সড়ক ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ভদোদরা পুলিশ কমিশনার বলেছেন, “এই ধরনের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা নিশ্চিত করব যে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে।”
এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নেটিজেনরা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন এবং সড়ক নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানাচ্ছেন।