
দোলের উৎসবের মাঝে দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে চাঞ্চল্যকর ঘটনা! মেয়াদোত্তীর্ণ কোমল পানীয় বিক্রির অভিযোগে হাতেনাতে ধরা পড়েছে এক হোটেল ব্যবসায়ী। ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ও শোরগোল ছড়িয়েছে। পুলিশ দোকানে তালা লাগিয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে আটক করেছে।
দুর্গাপুরের বেনাচিতি এলাকার ব্লু মুন হোটেলে মেয়াদোত্তীর্ণ কোল্ড ড্রিংকস ও প্যাকেটজাত খাবার বিক্রি হচ্ছে—এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে ফ্রিজ থেকে উদ্ধার হয় মেয়াদোত্তীর্ণ বহু কোমল পানীয় ও খাদ্যসামগ্রী। তৎক্ষণাৎ সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। দুর্গাপুর থানার পুলিশ হোটেলের মালিক বাপ্পা ব্রহ্মচারীকে আটক করে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশের বক্তব্য:
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেনাচিতির এই হোটেলে দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি চলছিল। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “আমরা খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ হানা দিই। ফ্রিজে মেয়াদোত্তীর্ণ কোল্ড ড্রিংকস ও প্যাকেটজাত খাবার মজুত ছিল। সব বাজেয়াপ্ত করে ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার গভীর তদন্ত চলছে।”
ব্যবসায়ীর দাবি:
আটক ব্যবসায়ী বাপ্পা ব্রহ্মচারী পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, “মেয়াদোত্তীর্ণ কোল্ড ড্রিংকসগুলো কোম্পানির ফেরত নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা সময়মতো নিয়ে যায়নি। আমি জেনেশুনে এগুলো বিক্রি করিনি।” তবে তাঁর এই দাবি এখনও যাচাই করছে পুলিশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ:
ঘটনার সূত্রপাত এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ থেকে। শিপ্রা মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলা জানান, “আমার ছেলে ওই দোকান থেকে একটি কোল্ড ড্রিংক কিনেছিল। খাওয়ার পর সন্দেহ হয়। প্যাকেট দেখে বুঝতে পারি যে এটির মেয়াদ উত্তীর্ণ। তৎক্ষণাৎ দুর্গাপুর থানায় খবর দিই। পুলিশ এসে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু এভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ জিনিস বিক্রি হচ্ছে জেনে আমরা আতঙ্কিত।”
এলাকায় আতঙ্ক:
দোলের মতো উৎসবের সময় এমন ঘটনায় বেনাচিতি এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে জনস্বাস্থ্যের উপর গুরুতর ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। অনেকে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ:
পুলিশ জানিয়েছে, বাজেয়াপ্ত পণ্যগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। এছাড়া, ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে খাদ্য নিরাপত্তা আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হতে পারে। ঘটনার তদন্তে এলাকার অন্যান্য দোকানেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
দোলের আনন্দের মাঝে এমন ঘটনা এলাকাবাসীকে শঙ্কিত করলেও পুলিশের তৎপরতায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে এই ঘটনা খাদ্য নিরাপত্তার প্রতি আরও সচেতনতার প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।