রঙের উৎসবে! রাসায়নিক রং থেকে আমাদের ত্বককে বাঁচানোর পথ বলে দিলেন চিকিৎসক

রঙের উৎসব দোলযাত্রা বা হোলি এলেই সবার মনে উচ্ছ্বাসের জোয়ার ওঠে। “হোলি হ্যায় ভাই হোলি হ্যায়, বুরা না মানো হোলি হ্যায়”—এই স্লোগানেই মেতে ওঠে ছোট-বড় সবাই। কিন্তু আনন্দের এই রঙের উৎসবের সঙ্গে লুকিয়ে থাকে বিপদের আশঙ্কাও। রাসায়নিক মিশ্রিত রঙের ব্যবহারে ত্বক ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। তাই হোলির রঙে রঙিন হতে গেলে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

প্রাকৃতিক রঙ থেকে রাসায়নিক রঙের যাত্রা

একসময় পলাশ, শিমূল, কেতকী ফুলের নির্যাস থেকে তৈরি হত রঙ। কিন্তু আধুনিক সময়ে বাজার দখল করেছে কৃত্রিম ও রাসায়নিক রং। এই রঙে উপস্থিত বিষাক্ত কেমিক্যাল আমাদের ত্বক ও চুলের মারাত্মক ক্ষতি করে। এমনকি, শ্বাসনালীতেও প্রভাব ফেলে।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

ইটিভি ভারতের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বিখ্যাত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ শর্মিষ্ঠা দাস জানিয়েছেন, রাসায়নিক রঙের সংস্পর্শে ত্বকে জ্বালা, চুলকানি, র‍্যাশ, এমনকি অ্যালার্জির সমস্যাও হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাও দেখা দেয়।

কীভাবে ত্বক রক্ষা করবেন?

১. প্রাক-প্রস্তুতি: হোলির আগে মুখে ও শরীরে নারকেল তেল বা ময়শ্চারাইজার লাগান। এতে ত্বকের ওপর একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি হয়। 2. পরিমিত রঙ ব্যবহার: রাসায়নিক রঙের পরিবর্তে হার্বাল রং ব্যবহার করুন। 3. শরীর ঢেকে রাখা: লম্বা পোশাক পরুন, যাতে ত্বক কম পরিমাণে রঙের সংস্পর্শে আসে। 4. রং খেলার পর পরিষ্কারকরণ: দ্রুত সাবান ও জল দিয়ে শরীর ও চুল ধুয়ে ফেলুন। 5. অতিরিক্ত সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শিশুদের জন্য বাড়তি সতর্কতা

শিশুদের ত্বক নরম ও সংবেদনশীল হওয়ায় তাদের জন্য সমস্যা বেশি হয়। আবিরের গুঁড়ো শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে গেলে অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাও দেখা দেয়। তাই শিশুদের রঙের সংস্পর্শ কম রাখা ও তাদের মুখমণ্ডল ঢাকা রাখা জরুরি।

তাহলে কি উৎসবের আনন্দ মাটি?

একেবারেই নয়! নিরাপদ ও পরিমিত পরিমাণে রং ব্যবহার করে, প্রাকৃতিক রঙকে বেছে নিয়ে এবং নিজের ত্বক ও স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে এই বসন্ত উৎসবে রঙিন হওয়া একদমই সম্ভব।

তাই বলছি, “হোলি হ্যায় ভাই হোলি হ্যায়”, তবে নিরাপত্তার বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না!

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy