বাংলাকে আবাসের বকেয়া টাকা কবে দেবে কেন্দ্র ? প্রশাসনের বৈঠক হবে আগামী সপ্তাহে

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ৭,৮৮৮ কোটি টাকা মেটানো নিয়ে চলতি মাসেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। আগামী ১৮ থেকে ২৫ মার্চের মধ্যে দিল্লিতে রাজ্যের শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। সূত্রের খবর, এই বৈঠকেই বকেয়া টাকা মেটানোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে।

গত চার মাস ধরে রাজ্যের বকেয়া টাকা সংক্রান্ত ফাইল শিবরাজ সিং চৌহানের টেবিলে পড়ে রয়েছে। মন্ত্রী নিজে এই ফাইল খতিয়ে দেখেছেন। তাঁর নির্দেশে রাজ্য সরকারের তরফে জমা দেওয়া ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট-সহ অন্যান্য নথিও পরীক্ষা করেছেন মন্ত্রকের শীর্ষ আমলারা। এরপর গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, মার্চ মাসের ১৮-২৫ তারিখের মধ্যে দিল্লিতে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন শিবরাজ। সরকারি সূত্রের দাবি, এই বৈঠক ফলপ্রসূ হলে চলতি অর্থবর্ষের শেষ, অর্থাৎ ৩১ মার্চের মধ্যে বকেয়া টাকার কিছু অংশ মিটিয়ে ফেলতে পারে কেন্দ্র।

এদিকে, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট সম্প্রতি সংসদে জমা পড়েছে। কংগ্রেস সাংসদ সপ্তগিরি উলকার নেতৃত্বাধীন এই কমিটির রিপোর্টে মনরেগা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) এবং প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা খাতে বাংলার বকেয়া টাকা আটকে রাখার জন্য কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই বিপুল পরিমাণ বকেয়ার কারণে রাজ্য সরকারের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে, যা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়।

দিল্লির সরকারি সূত্র জানায়, রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগে স্থায়ী কমিটি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলার বকেয়া ফাইল সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। তখন মন্ত্রক জানায়, বকেয়া সংক্রান্ত ফাইল ‘কমপিটেন্ট অথরিটি’-র কাছে রয়েছে। পরে কমিটি জানতে পারে, এই ফাইল শিবরাজ সিং চৌহানের কাছেই জমা রয়েছে। স্থায়ী কমিটির তৎপরতার পরই নড়েচড়ে বসে মন্ত্রক।

সংসদীয় কমিটি তাদের রিপোর্টে বাংলার বকেয়া দ্রুত মেটানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে স্পষ্ট সুপারিশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে সকলের নজর এখন শিবরাজের সঙ্গে রাজ্যের বৈঠকের দিকে। এই বৈঠকে কমিটির সুপারিশ মেনে বকেয়া ৭,৮৮৮ কোটি টাকার অন্তত একটি অংশ মেটানো হয় কি না, তা নিয়ে উৎকণ্ঠা রয়েছে। চলতি অর্থবর্ষের শেষে এই সিদ্ধান্ত কতটা ফলপ্রসূ হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy