
শুরু হচ্ছে দোল উৎসব। রঙের খেলা, উন্মাদনা আর আনন্দে ভরপুর এই উৎসবের জন্য অপরিহার্য পিচকারি ও রং। তবে এবারের হোলিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের একটি গয়নার দোকান। এখানে একটি রুপোর পিচকারি ও দুটি ছোট বালতি বিক্রি হয়েছে ১ লাখ টাকায়। অন্যদিকে, গোন্ডার একটি মিষ্টির দোকানে তৈরি হয়েছে ‘গোল্ডেন গুজিয়া’, যার দাম প্রতি কেজি ৫০ হাজার টাকা।
রুপোর পিচকারির জনপ্রিয়তা
চলতি বছরে বিশেষভাবে তৈরি এই রুপোর পিচকারি ও বালতি অসাধারণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই পণ্যগুলোর ওপর খোদাই করা নিখুঁত শিল্পকর্ম, মিনাকারি কাজ এবং পাথরের সূক্ষ্ম নকশা এগুলোকে আরও মূল্যবান করে তুলেছে। দোকান মালিক আদেশ কুমার জৈন জানিয়েছেন, “এটি একটি পুরোনো ঐতিহ্য। নববিবাহিত দম্পতির পরিবারের মধ্যে এই পিচকারি উপহার দেওয়ার রীতি রয়েছে। কনের পরিবার এটি বরপক্ষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপহার দেয়। এর দাম ৮,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।”
জৈন আরও জানান, শুধুমাত্র লখনউ শহরেই এখনও পর্যন্ত প্রায় ১,০০০টি পিচকারি বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা পাইকারি ব্যবসা করি। অনেক দোকানদার আমাদের কাছ থেকে পিচকারি কিনে তাদের গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করছেন। এই ঐতিহ্য আগামী দিনে আরও জনপ্রিয় হবে বলে আমি মনে করি।” বর্তমান প্রজন্মের কাছে পিচকারির গুরুত্ব কমলেও, বনেদি পরিবারগুলোর কাছে দোল এখনও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। অনেক বাড়িতে দেবতাকে পিচকারি ও বালতি উৎসর্গ করার রীতিও রয়েছে।
গোল্ডেন গুজিয়ার বিলাসিতা
দোলের আনন্দকে বিলাসবহুল করে তুলতে উত্তরপ্রদেশের গোন্ডার একটি মিষ্টির দোকানে তৈরি হয়েছে ‘গোল্ডেন গুজিয়া’। এই এক্সক্লুসিভ মিষ্টির দাম প্রতি কেজি ৫০ হাজার টাকা এবং প্রতি পিস ১,৩০০ টাকা। দোকানের ম্যানেজার শিবকান্ত চতুর্বেদী জানিয়েছেন, “এই গুজিয়ার ওপর ২৪ ক্যারেট সোনার একটি স্তর রয়েছে। ভেতরে রয়েছে উৎকৃষ্ট ড্রাই ফ্রুটসের মিশ্রণ। স্বাদে এবং চেহারায় এটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও বিলাসবহুল।”
দোলের নতুন মাত্রা
এবারের দোল উৎসবে রুপোর পিচকারি ও গোল্ডেন গুজিয়া ঐতিহ্যের সঙ্গে বিলাসিতার এক অনন্য মিশেল সৃষ্টি করেছে। লখনউয়ের রুপোর পিচকারি যেমন শিল্পকর্মের একটি দৃষ্টান্ত, তেমনই গোন্ডার গোল্ডেন গুজিয়া মিষ্টির জগতে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। এই দুইয়ের সমন্বয়ে দোলের আনন্দ এবার আরও রঙিন এবং বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে।
দোলের এই নতুন চমক দেখতে ও কিনতে ইতোমধ্যে দোকানগুলোতে ভিড় জমছে। নববিবাহিতদের পরিবার থেকে শুরু করে ঐতিহ্যপ্রিয় মানুষজন—সকলেই এই বিশেষ পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। উৎসবের আমেজে বিলাসিতার এই সংযোজন দোলকে আরও স্মরণীয় করে তুলবে বলে মনে করছেন অনেকে।