
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য নতুন বিপদ। তাঁর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য এই মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই ঘটনা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আরও কোণঠাসা করে দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, বিশেষ ইডি আদালতে কল্যাণময় ভট্টাচার্য রাজসাক্ষী হতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করেছে। শুধু তাই নয়, নিজের বিরুদ্ধে উঠে আসা দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মাফ পাওয়ার জন্যও আর্জি জানিয়েছেন তিনি। আদালতের নির্দেশে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে গোপন জবানবন্দি দেবেন। এই প্রথম নিয়োগ দুর্নীতির কোনও মামলায় কোনও অভিযুক্ত রাজসাক্ষী হতে সম্মত হলেন, যা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য বড় ধাক্কা।
ইডির চার্জশিটে কল্যাণময় ভট্টাচার্যের নাম অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা কল্যাণময়ের হাতে পৌঁছেছিল। নিউ ইয়র্কে থাকা কল্যাণময় গত ডিসেম্বরে কলকাতায় ফিরে আসেন এবং বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজিরা দেন। সেই সময় আদালত তাঁকে শর্ত দিয়েছিল যে, পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি ভারত ছাড়তে পারবেন না।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা একটি অভিজাত স্কুলের সন্ধান পায়। জানা যায়, স্কুলটি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রীর নামে নথিভুক্ত। পরবর্তী তদন্তে উঠে আসে যে, ওই স্কুলের চেয়ারম্যানের পদে রয়েছেন কল্যাণময় ভট্টাচার্য। এরপর তাঁকে একাধিকবার তলব করা হয়। ২০২২ সালে তিনি ইডি দফতরেও হাজিরা দিয়েছিলেন। তদন্তে দুর্নীতির টাকার লেনদেনে তাঁর ভূমিকার অভিযোগ উঠে আসে।
জামাইয়ের এই পদক্ষেপে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনি ও রাজনৈতিক অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে। তদন্তকারী সংস্থার হাতে এখন কল্যাণময়ের জবানবন্দি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজ করতে পারে। এই মামলায় পার্থ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন। জামাই রাজসাক্ষী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা আরও জোরালো হতে পারে বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলা রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। কল্যাণময়ের এই সিদ্ধান্ত মামলার গতিপথে নতুন মোড় আনতে পারে। আদালতের পরবর্তী শুনানি এবং তদন্তের দিকে এখন সবার নজর।