” ৯০% কম দামে মিলবে ওষুধ”-ডায়েবেটিস রোগীদের জন্য GoodNews দিলো এই সংস্থা

বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, এবং ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (IDF) জানিয়েছে, ভারতে বর্তমানে ১০.১ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। এই রোগীদের জন্য একটি বড় স্বস্তির খবর এসেছে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত ওষুধ এমপ্যাগ্লিফ্লোজিন এখন অনেক কম দামে বাজারে পাওয়া যাবে। জার্মান কোম্পানি বোহরিংগার ইঙ্গেলহেইমের এই ওষুধের পেটেন্টের মেয়াদ গত ১১ মার্চ শেষ হয়েছে। ফলে ভারতীয় ওষুধ কোম্পানিগুলি এটির জেনেরিক সংস্করণ কম দামে বাজারে আনছে।

৬-১৪ টাকায় এমপ্যাগ্লিফ্লোজিন
পেটেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ম্যানকাইন্ড ফার্মা, টরেন্ট, অ্যালকেম, ডক্টর রেড্ডি’স এবং লুপিনের মতো ভারতীয় কোম্পানিগুলি এমপ্যাগ্লিফ্লোজিনের জেনেরিক সংস্করণ বাজারে আনার পরিকল্পনা করেছে। বাজার অংশীদারিত্বে ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম কোম্পানি ম্যানকাইন্ড ফার্মা এই ওষুধের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে। জার্মান কোম্পানি যেখানে প্রতি ট্যাবলেটের দাম ৬০ টাকা রেখেছিল, সেখানে ম্যানকাইন্ড ফার্মা এটি ৬ টাকার মতো কম দামে বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যান্য কোম্পানির জেনেরিক সংস্করণও প্রতি ট্যাবলেট ৬ থেকে ১৪ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। এর ফলে এই ওষুধটি আরও বেশি সংখ্যক রোগীর কাছে সহজলভ্য হবে।

ভারতে ডায়াবেটিসের উদ্বেগজনক চিত্র
ভারতে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করছে। IDF-এর তথ্য অনুযায়ী, ১০.১ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত, এবং তাদের বেশিরভাগই চিকিৎসার খরচ নিজের পকেট থেকে বহন করেন। ডায়াবেটিস একটি জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক ও কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষতি করে। এমপ্যাগ্লিফ্লোজিন শুধু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেই নয়, হৃদরোগ ও কিডনি রোগের চিকিৎসায়ও কার্যকর। দাম কমার ফলে এই ওষুধ এখন বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছবে।

মানসম্মত ওষুধের প্রতিশ্রুতি
ম্যানকাইন্ড ফার্মার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা উচ্চমানের কাঁচামাল (USFDA-প্রত্যয়িত) ব্যবহার করছি। আমাদের নিজস্ব ওষুধ উপাদান উৎপাদনের কারণে খরচ কমছে। দুটি ভিন্ন ব্র্যান্ডে এই ওষুধ বাজারে আনতে আমরা পৃথক দল মোতায়েন করেছি।” তিনি আরও বলেন, এই পদক্ষেপ বাজারে তাদের অংশীদারিত্ব বাড়াবে। অন্যান্য কোম্পানিগুলিও মানসম্মত জেনেরিক সংস্করণ উৎপাদনে জোর দিচ্ছে।

রোগীদের জন্য স্বস্তি
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এমপ্যাগ্লিফ্লোজিন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি হৃদরোগ ও কিডনি রোগের ঝুঁকি কমায়। এতদিন এই ওষুধের উচ্চ মূল্য অনেক রোগীর জন্য বাধা ছিল। পেটেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এবং জেনেরিক সংস্করণের আগমনে দাম ৯০% পর্যন্ত কমতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ম্যানকাইন্ড ফার্মা ৬০ টাকার ওষুধটি মাত্র ৬-৯ টাকায় বিক্রির পরিকল্পনা করছে। এটি ভারতের ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বড় স্বস্তি নিয়ে আসবে।

বাজারে প্রভাব
ওষুধের দাম কমার ফলে বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং রোগীরা সাশ্রয়ী মূল্যে চিকিৎসা পাবেন। ম্যানকাইন্ড ফার্মা, টরেন্ট, অ্যালকেম, ডক্টর রেড্ডি’স এবং লুপিনের মতো কোম্পানিগুলি এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের বাজার সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জীবনমান উন্নত করবে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy