“ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা”- সীমান্তে ১৩ মাসে ২৬০১ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে বিএসএফ

ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাকালে গত ১৩ মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা থেকে ২ হাজার ৬০১ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বুধবার ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই।

লিখিত প্রশ্নের উত্তরে রাই রাজ্যসভায় জানান, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) মোট ২,৬০১ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই সীমান্ত থেকে ১৭৬ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মাসভিত্তিক গ্রেপ্তারের হিসাব
নিত্যানন্দ রাইয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ছিল নিম্নরূপ: জানুয়ারিতে ১৩৮, ফেব্রুয়ারিতে ১২৪, মার্চে ১১৮, এপ্রিলে ৯১, মে মাসে ৩২ (বছরের সর্বনিম্ন), জুনে ২৪৭, জুলাইয়ে ২৬৭, আগস্টে ২১৪, সেপ্টেম্বরে ৩০০, অক্টোবরে ৩৩১ (সর্বোচ্চ), নভেম্বরে ৩১০ এবং ডিসেম্বরে ২৫৩ জন। এছাড়া, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ১৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, মে মাসে গ্রেপ্তারের সংখ্যা সবচেয়ে কম ছিল, যেখানে অক্টোবরে তা সর্বাধিক।

সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধ কার্যকলাপ রোধে বিএসএফের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিত্যানন্দ রাই জানান, “উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, নজরদারি বৃদ্ধি এবং জনবল বাড়ানোর মাধ্যমে সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তে নিরবচ্ছিন্ন টহল, তল্লাশি, পর্যবেক্ষণ চৌকি স্থাপন এবং স্থানীয় পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।”

সরকারের অবস্থান
মন্ত্রী আরও জানান, ভারত সরকার সীমান্ত নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। বিএসএফের এই তৎপরতা অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান এবং সীমান্তবর্তী অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনাও চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রেক্ষাপট
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গত কয়েক বছরে অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নিয়ে ভারত সরকার উদ্বিগ্ন। ৪,০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সীমান্তের বেশ কিছু অংশ এখনও পুরোপুরি বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা হয়নি, যা অনুপ্রবেশের একটি বড় কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিএসএফের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

(সূত্র: এএনআই)

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy