
মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসনের মধ্যেই নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রতারকরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ সেজে বিধায়কদের মন্ত্রিপদ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিলেন। বিনিময়ে দাবি করা হচ্ছিল মোটা অঙ্কের টাকা। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বেশ কয়েকজন বিধায়ক প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং লক্ষাধিক টাকা খুইয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রতারণার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারকরা বিধায়কদের ফোন করে নিজেদের জয় শাহ বলে পরিচয় দিতেন। তারা দাবি করত, ৪ কোটি টাকা দিলেই মণিপুরের নতুন মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব নিশ্চিত করা হবে। রাষ্ট্রপতি শাসন উঠে গেলে নতুন সরকার গঠন হবে, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই প্রতারণার ফাঁদ পেতে রাখা হয়।
কয়েকজন বিধায়ক এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে টাকা পাঠিয়েও দেন। কিন্তু পরে এক বিধায়কের সন্দেহ হয় এবং তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত শুরু হতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে।
পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (BNS) ৩১৮(৪) প্রতারণা ও ৩১৯(২) ধারায় মামলা রুজু করেছে। তদন্তে নেমে ইম্ফল পুলিশ ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা হলেন—
প্রিয়াংশু পন্থ (১৯) – দিল্লির বাসিন্দা
গৌরব নাথ (১৯) – দিল্লির বাসিন্দা
উভেশ আহমেদ (১৯) – উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা
তিনজনকে দিল্লিতে এনে জেরা করা হচ্ছে। পুলিশের সন্দেহ, এই প্রতারণার পিছনে আরও বড় চক্র সক্রিয় রয়েছে।
চাঞ্চল্যকরভাবে, মণিপুর বিধানসভার স্পিকারও এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তবে তিনি ঠিক কত টাকা দিয়েছেন বা প্রতারণার ফাঁদে কিভাবে পা দিয়েছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর মণিপুরের রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিরোধীরা বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তবে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এই চক্রের পেছনে আরও কারা জড়িত, তা জানতে তদন্ত জারি রয়েছে। নতুন কোনো তথ্য সামনে এলে আরও গ্রেফতারির সম্ভাবনা রয়েছে।