“নিরাপত্তা ও গ্যারান্টিসহ শান্তি দরকার ইউক্রেনের”-স্পষ্ট ভাষায় জানালেন প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তাঁর দেশের শান্তি প্রয়োজন, তবে তা “দৃঢ় নিরাপত্তা গ্যারান্টি দ্বারা সমর্থিত” হতে হবে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনই একমাত্র ব্যক্তি যিনি এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে আগ্রহী বলে মনে করেন তিনি। রোববার (২ মার্চ) বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

লন্ডনে ইউক্রেন বিষয়ক একটি শীর্ষ সম্মেলনের আগে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ বলেন, “আমরা ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির মাধ্যমে যুদ্ধের অবসানের জন্য একটি যৌথ কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে কাজ করছি। পুতিন ছাড়া আর কেউ যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে বা সংঘাতের দ্রুত প্রত্যাবর্তনে আগ্রহী নয়। তাই ইউক্রেনের চারপাশে ঐক্য বজায় রাখা এবং আমাদের মিত্রদের—ইউরোপের দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রের—সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের দেশের অবস্থান শক্তিশালী করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

রোববার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের আয়োজিত এই শীর্ষ সম্মেলনে জেলেনস্কি যোগ দিয়েছেন। সম্মেলনে অনেক ইউরোপীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের পক্ষে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানও এতে অংশ নিয়েছেন।

জেলেনস্কির মতে, ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কেবল যুদ্ধবিরতি যথেষ্ট নয়। তিনি বারবার জোর দিয়েছেন যে, রাশিয়ার ভবিষ্যৎ আগ্রাসন থেকে রক্ষার জন্য শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপরিহার্য। এই সম্মেলনে তিনি ইউরোপীয় নেতাদের কাছে তাঁর এই অবস্থান তুলে ধরেছেন।

ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে। এই সময়ে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের কাছ থেকে ব্যাপক সামরিক ও আর্থিক সাহায্য পেয়েছে। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে জেলেনস্কি ইউরোপীয় সমর্থনকে আরও জোরদার করার চেষ্টা করছেন।

লন্ডনের এই সম্মেলনকে তিনি “ইউক্রেন ও আমাদের ভাগ করা ইউরোপীয় ভবিষ্যতের” জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা ইউরোপে একসঙ্গে কাজ করছি, যাতে আমেরিকার সঙ্গে সহযোগিতার একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি হয়। শান্তি সত্যিকারের হতে হলে নিরাপত্তা গ্যারান্টি অবশ্যই বাস্তবসম্মত হতে হবে।”

ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, তিনি একটি ন্যায্য ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চান, যেখানে তাঁর দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। আগামী দিনে ইউরোপ ও আমেরিকার সঙ্গে এই আলোচনা কোন দিকে যায়, সেটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy