‘বিরলতম অপরাধ’, -পথশিশুকে যৌন নির্যাতনে ফাঁসির সাজা দিলো আদালত

কলকাতার বড়তলা থানা এলাকায় সাত মাসের শিশুকন্যার উপর পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় আদালত দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত নিল। সোমবার, ব্যাঙ্কশাল কোর্ট অভিযুক্ত রাজীব ওরফে গোবরাকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করল। সরকারি আইনজীবী এই ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে অভিহিত করেন এবং কঠোরতম শাস্তির দাবি করেন।

৪০ দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা, বিরলতম মামলা বলল আদালত
মাত্র ৪০ দিনের শুনানির মধ্যেই এই চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হলো। সরকারি কৌঁসুলি আদালতে জানান, ৭ মাসের এক শিশুকে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা শুধু নৃশংস নয়, মানবতাকে কলঙ্কিত করেছে। তাই এমন অপরাধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া জরুরি।

তবে আইনি নিয়ম অনুযায়ী, দোষী চাইলে উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন।

ঘটনার ভয়াবহ বর্ণনা
পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর গভীর রাতে বড়তলা থানা এলাকার ব্রিডন স্ট্রিটের ফুটপাথে ঘুমন্ত অবস্থায় শিশুকন্যাকে তুলে নিয়ে যায় রাজীব ওরফে গোবরা।

পরদিন সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে কাছেরই অন্য এক ফুটপাথে পাওয়া যায়। শিশুটির অভিভাবকের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ।

সিসিটিভি ফুটেজে মিলল ক্লু, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার
তদন্তকারীরা ফুটপাথ সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। সেখানে এক যুবককে সন্দেহজনকভাবে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়, তার হাতেই ছিল শিশুকন্যা।

ফুটেজ রাজ্যের সব থানায় পাঠানো হয়। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারের পর জেরায় নিজের অপরাধ স্বীকার করে রাজীব। ঘটনার ২৬ দিনের মধ্যেই চার্জশিট জমা দেওয়া হয় আদালতে।

কঠোর শাস্তির আবেদন পুলিশের
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, “ধৃতের বিরুদ্ধে সমস্ত তথ্য-প্রমাণ আমরা আদালতে জমা দিয়েছি। আমরা চাই এই নৃশংস অপরাধের কঠোরতম সাজা হোক, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।”

এই মামলায় একাধিক সাক্ষী ও প্রমাণ বিশ্লেষণ করে রাজীবকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং আদালত তাকে ফাঁসির সাজা দেয়।

এই রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, এমনটাই মনে করছে পুলিশ ও সরকারি আইনজীবী মহল। তবে দোষী পক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।