বিশেষ: সকালে মাত্র এক ঘণ্টার নিয়মেই জেফ বেজোস আরও স্মার্ট হয়েছেন, জেনেনিন কী সেটি?

বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি জেফ বেজোস, যিনি ২৪৭.৪ বিলিয়ন ডলার নিয়ে ফরবসের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছেন, তাঁর সকালটি কি সাধারণ এক ব্যক্তির মতোই শুরু হয়? একান্তে নিজের জীবন উপভোগ করার জন্য তিনি কিছু নিয়ম মেনে চলেন, যা তাঁর মস্তিষ্কের শান্তি ও শারীরিক সুস্থতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

২০১৮ সালে বেজোস জানিয়েছিলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি প্রথমে পত্রিকা পড়েন, কফি খান, এবং পরিবারের সঙ্গে সকালের নাশতা সারেন। তবে ২০১৯ সালে স্ত্রী ম্যাকেনজির সঙ্গে ২৫ বছরের দাম্পত্য সম্পর্কে ইতি টানার পর, বেজোসের জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন এসেছে। সেই সময় থেকেই তিনি ৫৫ বছর বয়সী লরেন সানচেজের সঙ্গে একত্রে বাস করছেন। তবে, তাঁদের সকালের রুটিনে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসেনি।

স্ক্রিন ফ্রি মর্নিং

পিপল ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লরেন সানচেজ বলেছেন, “আমরা দুজনই সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিই না। আমরা কিছু নিয়ম মেনে চলি।” এটি তাদের রুটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ২০১৮ সাল থেকে জেফ বেজোস তাঁর সকালের প্রথম এক ঘণ্টা স্ক্রিন থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর মতে, এর ফলে তিনি জীবনের প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হতে পারেন এবং দিনটিকে আরও ভালভাবে উপভোগ করতে পারেন।

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর স্ক্রিনটাইম

স্ট্যামফোর্ড লাইফস্টাইল মেডিসিন প্রোগ্রামের নিউরোসায়েন্টিস্ট ম্যারিস লোয়েফলার বলছেন, “সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নেওয়ার অভ্যাস মানসিক স্বাস্থ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি মস্তিষ্ককে ক্লান্ত করে তোলে এবং দিনভর নেতিবাচক চিন্তা ও উদ্বেগ তৈরি করতে পারে।” তিনি আরও বলেন, সকালে স্ক্রিনের সাথে প্রথম যোগাযোগের ফলে মস্তিষ্কের গ্রে ম্যাটার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি সমস্যা ও নিউরনজনিত রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

শরীর ও মনের জন্য সকালের প্রস্তাবনা

এখন প্রশ্ন হল, বেজোসের মতো সফল ব্যক্তির সকালে কী কী কাজ থাকে যা তার মানসিক শান্তি বজায় রাখে? স্ট্যামফোর্ড লাইফস্টাইল মেডিসিন প্রোগ্রাম পরামর্শ দেয়, সকালে প্রথম এক ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম না রাখাই ভালো। অতিরিক্ত স্ক্রিনটাইমের পরিবর্তে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাসকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যেমন:

ব্যায়াম করা
কাছের আত্মীয় বা বন্ধুর সাথে ফোনে কথা বলা
স্বাস্থ্যকর নাশতা গ্রহণ করা
মেডিটেশন করা
পছন্দের গান শোনা
‘গ্রাটিটিউড লিস্ট’ তৈরি করা
বই বা পত্রিকা পড়া
প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানো বা হাঁটাহাঁটি করা
এভাবে, সকালের প্রথম এক ঘণ্টা বিশ্রাম ও প্রস্তুতির জন্য অতিবাহিত হলে, এটি সারা দিনের জন্য একটি ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে।

জেফ বেজোসের সকালের রুটিন প্রমাণ করে, কীভাবে একটি সুশৃঙ্খল এবং স্ক্রিন ফ্রি সকাল মনোযোগ ও মানসিক শান্তি এনে দিতে পারে, যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনে সহায়ক হতে পারে। একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পথে, বেজোসের মতো নিয়মিত অভ্যাস বজায় রাখা এবং সকালের প্রথম ঘণ্টাটি স্ক্রিন থেকে দূরে রাখার অভ্যাস তাকে তার কর্মক্ষমতা ও শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করেছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy