বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধরপাকড় চলছে। সর্বশেষ আসামে ৪১৬ জনকে গ্রেপ্তারের পর বাল্যবিবাহ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া মানুষের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার জনে পৌঁছেছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বাস শর্মা রবিবার এই তথ্য জানান।
রবিবার মধ্যরাতে রাজ্যজুড়ে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৪১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে এক বিবৃতিতে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বাস শর্মা বলেন, ‘সমাজের এই অশুভ প্রবণতা বন্ধ করতে আমরা শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়া অব্যাহত রাখব।
বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে আসাম তার লড়াই চালিয়ে যাবে।’
আসামে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। এর আগেও দুই দফায় রাজ্যজুড়ে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এদিন তৃতীয়বার রাজ্যটির বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালানো হলো।
ভারতে ন্যূনতম বিয়ের বয়স ১৮। কিন্তু অনেকেরই ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়ে যায়। জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, ভারতে ২২ কোটির বেশি অপ্রাপ্তবয়সী বিবাহিত মেয়ে রয়েছে। অবশ্য এই শতাব্দীর শুরু থেকে বাল্যবিবাহের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
‘বাল্যবিবাহমুক্ত ভারত’ গঠনের জন্য এরই মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। গত মাসে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি কর্মসূচিও চালু করা হয়েছে। ভারতের কোথাও বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটলে তা সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের নজরে আনার জন্য একটি পোর্টালও চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী বলেছেন, ভারতে গড়ে প্রতি পাঁচজন মেয়ের মধ্যে একজনের ১৮ বছরের কম বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি বাল্যবিবাহের হার আগের তুলনায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৫-১৬ সালে বাল্যবিবাহের হার ছিল ২৬.৮ শতাংশ। ২০১৯-২১ সালের মধ্যে তা কমে ২৩.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০২৯ সালের মধ্যে তা ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্র : এএফপি, আনন্দবাজার পত্রিকা