Share: আদানির শেয়ারে বড়সড়ো ধস, দুই দিনে সোয়া ২ লাখ কোটি টাকা হারাল আদানি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আদানি গ্রুপের প্রধান গৌতম আদানিকে ঘুষ ও জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত করার পর আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠীটির শেয়ারদরে ধস নেমেছে। আদানির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর আজ বৃহস্পতিবার নাগাদ গোষ্ঠীটি ২৭ বিলিয়ন ডলার বা ২ লাখ ২৮ হাজার কোটির বেশি হারিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার মার্কিন শেয়ার বাজারসহ আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন শেষে আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ার ২৩ শতাংশ পড়ে, যা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর এক দিনে সবচেয়ে বড় পতন।

এ ছাড়া, একই দিনে আদানি পোর্টস, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি গ্রিন, আদানি পাওয়ার, আদানি উইলমার, আদানি এনার্জি সল্যুশনস, এএসসি এবং আম্বুজা সিমেন্টসের শেয়ার ৭ শতাংশ থেকে ১৯ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। তবে এনডিটিভি শেয়ার দশমিক ২ শতাংশ বাড়ে। ফলে, আদানি গ্রুপের মোট বাজারমূল্য মঙ্গলবারের ১৬৯ দশমিক ১ বিলিয়ন থেকে কমে বৃহস্পতিবার ১৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

এসএমসি গ্লোবাল সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক সৌরভ জৈন বলেন, ‘করপোরেট শাসনব্যবস্থায় অনিয়ম বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমায়। পরিস্থিতি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত তারা (বিনিয়োগকারীরা) আদানির শেয়ার থেকে দূরে থাকবে।’

এদিকে, আদানি গ্রুপ মার্কিন কৌঁসুলিদের অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। দুই বছর আগে মার্কিন শর্টসেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কর স্বর্গ (ট্যাক্স হ্যাভেন—যেসব দেশে খুব একটা কর দিতে হয় না) ব্যবহার ও শেয়ার কারসাজির অভিযোগ আনে। এরপর গোষ্ঠীটি বিপুল পরিমাণ মূলধন হারিয়েছিল। এই অভিযোগও আদানি গ্রুপ অস্বীকার করেছিল।

আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ ও জালিয়াতির মামলাআদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ ও জালিয়াতির মামলা
মার্কিন প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, আদানি ও তাঁর ভাগনে সাগর আদানি ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিয়ে ২০ বছরে ২ বিলিয়ন ডলারের লাভজনক চুক্তি অর্জন করেছেন। এর মধ্যে ভারতের বৃহত্তম সৌর প্রকল্প নির্মাণও অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া, আদানি গ্রিন এনার্জির সাবেক প্রধান নির্বাহী (সিইও) বিনীত জৈনসহ অভিযুক্তরা ৩ বিলিয়ন ঋণ ও বন্ড সংগ্রহের সময় দুর্নীতি লুকিয়েছেন।

আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর আদানি গ্রিন এনার্জি ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বন্ড ছাড়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছে। এই বিষয়ে বিশ্লেষক নারিন্দর ওয়াধওয়া বলেন, ‘এই মুহূর্তে ব্যাপক নজরদারির কারণে গ্রুপটির পক্ষে বৈশ্বিক বাজারে মূলধন সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়েছে।’

এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালের দিকেই এশিয়ার বাজারে আদানি পোর্টস ও বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের বন্ডের শেয়ারদর অন্তত ৩ থেকে ৫ সেন্ট পর্যন্ত পড়েছে, যা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্ট প্রকাশের পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে বড় পতন।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy