মার্কিন কংগ্রেসে মহিলাদের শৌচাগারে যেতে পারবেন না ট্রান্সজেন্ডার সদস্যরা

মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের একমাত্র ট্রান্সজেন্ডার সদস্য সারা ম্যাকব্রাইড। ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী আর ছয় সপ্তাহ পর শপথ নিতে যাচ্ছেন। কিন্তু এর আগেই তাঁকে মুখোমুখি হতে হলো ভিন্ন এক সমস্যার। ক্যাপিটল হিল বা যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবনে নারীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার ব্যবহার করতে পারবেন না সারা।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস।

কোনো ট্রান্সজেন্ডার নারী কংগ্রেস ভবনে নারীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার ব্যবহার করতে পারবেন না—গত সোমবার এ প্রস্তাব প্রতিনিধি পরিষদে উত্থাপন করেন দক্ষিণ ক্যারোলাইনার রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য ন্যান্সি মেস।

তিনি এক্সে এক পোস্টে বলেন, জন্মগতভাবে যাঁরা পুরুষ, নারীদের ব্যক্তিগত পরিসরে তাঁদের কোনো স্থান নেই। এটাই চূড়ান্ত।

ন্যান্সির প্রস্তাবে সমর্থন দিয়ে নিম্নকক্ষের রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন বলেন, কংগ্রেসের সদস্য ও কর্মচারীরা তাঁদের জৈবিক লিঙ্গ অনুযায়ী নির্ধারিত শৌচাগার ব্যবহার করবেন।

গত বুধবার এক বিবৃতিতে মাইক বলেন, কংগ্রেস ভবনের সব শৌচাগার, পোশাক পরিবর্তনের কক্ষ, লকার রুমগুলো নারী–পুরুষ অনুযায়ী ভাগ করা আছে। নারীদের জন্য নির্ধারিত পরিসরে শুধু নারীদের অধিকার থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেন লুইজিয়ানার এই রিপাবলিকান প্রতিনিধি।

তিনি আরও বলেন, কংগ্রেসকে আগে কখনো এমন সমস্যায় পড়তে হয়নি। বিষয়টি সদস্যদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সারা ম্যাকব্রাইড অভিযোগ করেন, দেশের প্রকৃত সমস্যাগুলো থেকে মনোযোগ সরাতে এসব করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি শৌচাগার নিয়ে লড়াই করতে আসিনি, আমি ডেলাওয়ারের মানুষের জন্য লড়তে এসেছি, যারা পরিবারের খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।’

তবে সারা জানান, সবাই একমত না হলেও অন্য সদস্যের মতো তিনিও বিদ্যমান নিয়ম মেনে চলবেন।

ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরা তাঁদের লিঙ্গ পরিচয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ শৌচাগার ব্যবহারের অনুমতি পাবেন কিনা—এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারেও বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে ছিল।

গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রান্সজেন্ডারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা বেড়ে গেছে। গত বছর ৩৭টি অঙ্গরাজ্যে লিঙ্গ পরিবর্তনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে অন্তত ১৪২টি আইন পাস করা হয়। এর মধ্যে ট্রান্সজেন্ডার কিশোরী ও নারীদের জন্য স্কুল ও কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানে নারীদের শৌচাগারে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছে অন্তত ১১টি রাজ্য।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy