অনলাইন গ্রুমিং বা শিশু নিপীড়নের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে স্ন্যাপচ্যাট। অপরাধের সঙ্গেও এই মেসেজিং অ্যাপটি জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে।
যুক্তরাজ্যের শিশু দাতব্য সংস্থা ‘ন্যাশনাল সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু চিলড্রেন বা এনএসপিসিসি’কে দেওয়া পুলিশের এক পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
অনলাইন গ্রুমিং কথাটির প্রচলিত মানে হচ্ছে, যৌন নিপীড়নের লক্ষ্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিশুদের ওপর প্রয়োগ করা নির্যাতন কৌশল। এতে প্রাপ্তবয়স্ক নিপীড়করা শিশুদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে, যাতে করে শিশুদেরকে নিজেদের নাগালে আনতে পারে তারা। আর এই নিপীড়ন সবসময় শারীরিক নয়, অনলাইনের ভার্চুয়াল জগতেও ঘটতে পারে।
যুক্তরাজ্য পুলিশের ৪৫টি বিভাগের নতুন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩-২৪ সালে এমন শিশু অপরাধ রেকর্ড হয়েছে ৭ হাজার ৬২টি। যৌন যোগাযোগ নিয়ে রেকর্ড রাখার কাজটি শুরু হয় তার আগের বছরই। আর সে বছরের তুলনায় পরের বছর এ অপরাধের হার বেড়েছে ৮৯ শতাংশ।
এনএসপিসিসি-এর তথ্যে দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে স্ন্যাপচ্যাট, যার মাধ্যমে অনলাইনে শিশুদের টার্গেট করছে অপরাধীরা।
প্রায় অর্ধেক অনলাইন গ্রুমিংয়ের ঘটনায় যেখানে যোগাযোগের মাধ্যম প্রকাশ করা হয়েছে, তার মধ্যে এক হাজার আটশ ২৪টি ঘটনায় ব্যবহৃত হয়েছে স্ন্যাপচ্যাট।
মেটা মালিকানাধীন বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মও অপরাধীদের কাছে জনপ্রিয় বলে প্রমাণ মিলেছে পরিসংখ্যানে। এর মধ্যে ১২ শতাংশ ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ, ১২ শতাংশ ক্ষেত্রে ফেইসবুক ও মেসেঞ্জার এবং ৬ শতাংশ ক্ষেত্রে ইনস্টাগ্রাম-এর নাম উঠে এসেছে।
এনএসপিসিসি’র প্রধান নির্বাহী পিটার ওয়ানলেস বলেন, “অনলাইন নিরাপত্তা আইন পাশ হওয়ার এক বছর পেরিয়ে গেলেও আমরা এখনও অপেক্ষা করছি কখন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো তাদের বিভিন্ন প্লাটফর্মকে শিশুদের জন্য নিরাপদ করবে।”
যুক্তরাজ্যের নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী জেস ফিলিপস বলেন, “শিশু যৌন নিপীড়ন একটি জঘন্য অপরাধ, যা ভুক্তভোগীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মানসিক আঘাত বয়ে আনে। অনলাইন নিরাপত্তা অ্যাক্টটিতে পরিষ্কার লেখা আছে, শিশুদের যৌন নিপীড়নের ছবি তৈরি, শেয়ার ও কোনো শিশুকে অনলাইন গ্রুমিং করার বিষয়টি একেবারে বেআইনি।”
এদিকে, অফকম-এর এক মুখপাত্র বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি “অনলাইন নিরাপত্তা আইনের অধীনে ব্যবস্থা নিতে আইনগতভাবে বাধ্য থাকবে। একইসঙ্গে শিশুদের সুরক্ষার জন্য এসব কোম্পানিকে আরও অনেক পদক্ষেপ নিতে হবে।”