উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভে গুলি ছোড়ার ঘটনায় এক শিশুসহ অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভে লাখো মানুষ যোগ দেন। তাদের দাবি ছিল, সেনাবাহিনীকে বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিকেলে রাজধানী খার্তুমের কেন্দ্রস্থলে সংখ্যায় বাড়তে থাকা বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের বাধা দিতে কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ ও জলকামান ব্যবহার করে।
তাদের হিসাবে খার্তুম ও এর জোড়া শহর ওমদুরমান ও বাহরিতে অন্তত লাখখানেক লোক জড়ো হয়েছিল, যা কয়েকমাসের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের ওমদুরমান থেকে খার্তুমে যাওয়া আটকানোর চেষ্টা করার সময় নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদুনে গ্যাস ও গুলি ছোড়ে, এরপরও পরে কিছু বিক্ষোভকারী নদীর অপর পাড়ে চলে আসতে সক্ষম হয়।
এদিন যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ছয় জন ওমদুরমানে, একজন খার্তুমে এবং বাহরিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর আট মাসে মোট ১১১ জনের মৃত্যু হল।
সেন্ট্রাল কমিটি অব সুদানিজ ডক্টরস জানিয়েছে, এদিন বহু লোক আহত হয়েছে এবং তারা খার্তুমের যে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী চড়াও হয়েছিল।
তবে সুদানের কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
তিন বছর আগে বিক্ষোভের মাধ্যমে দেশটির বহুদিনের সামরিক নেতা ওমর আল-বশির ক্ষমতাচ্যুত হলে সামরিক ও বেসামরিক পক্ষগুলোর মধ্যে হওয়া সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষমতা ভাগাভাগি হয়। কিন্তু গত অক্টোবরে জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল বুরহানের নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী বেসামরিক অন্তর্বর্তী সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে।
এরপর থেকেই সামরিক বাহিনীর রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার দাবিতে সুদানজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়।
১৯৮৯ সালের ৩০ জুন এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বশির ক্ষমতা দখল করেছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই ঘটনার বার্ষিকীতে নতুন সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে ফের প্রতিবাদে নামে সুদানের জান্তাবিরোধী প্রতিবাদকারীরা।