ভালোবাসা মানে না কোনো বাধা, এমনকি যুদ্ধও তার সামনে প্রতিবন্ধকতা হতে পারে না- এ কথাই যেন আবার প্রমাণ করলেন এক রুশ প্রেমিক ও ইউক্রেনীয় প্রেমিকা। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চলাকালেই বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন এ যুগল, তা-ও আবার স্বদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সুদূর মেক্সিকো গিয়ে।
আলোচিত এই বিয়ের পাত্র রুশ নাগরিক সেমেন বোবরোভস্কি ও পাত্রী ইউক্রেনীয় নাগরিক দারিয়া সাখনিউক। গত বুধবার (১৩ এপ্রিল) মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের তিজুয়ানা শহরে সিভিল রেজিস্ট্রি অফিসে বিয়ে করেছেন তারা।
সেমেন-দারিয়ার প্রেমকাহিনী শুরু হয়েছিল বছর তিনেক আগে। সেসময় ইউক্রেনে গিয়ে দারিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় সেমেনের, এরপর ভালো লাগা থেকে ধীরে ধীরে ভালোবাসা। তাদের বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল মূলত কিয়েভে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। তবে যুদ্ধ তাদের আলাদা করতে পারেনি। হাতে হাত রেখে ইউক্রেন ছাড়েন দুজনেই।
এ যুগল টিভি নেটওয়ার্ক টেলিমুন্ডো ২০কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, তারা এক দেশ থেকে আরেক দেশ, এভাবে ছয় দিনে কয়েক হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে পৌঁছান। লক্ষ্য ছিল শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা।
কিন্তু মার্কিন কর্তৃপক্ষ শুধু দারিয়াকে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে রুশ সম্প্রদায়ের প্রবেশ একপ্রকার বন্ধ রয়েছে। কেবল সেসব রুশ নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে, যারা প্রমাণ দেখাতে পারছেন তাদের পরিবার সেখানে রয়েছে। তবে এখন বিয়ে হয়ে যাওয়ায় দারিয়ার সঙ্গে সেমেনও যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাবেন বলে আশাবাদী এ দম্পতি।
তাদের বিয়েকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছেন মেক্সিকান আইনজীবী জোশুয়া প্লাসেন্সিয়া। বিয়েতে সাহায্য করায় তিজুয়ানাবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বোবরোভস্কি বলেছেন, আমরা খুবই খুশি। মেক্সিকান জনগণ আমাদের জন্য যা করেছে তাতে আমরা আনন্দ ও কৃতজ্ঞতায় পরিপূর্ণ।
সূত্র: রয়টার্স, এনবিসি ৭